হুসাইন বিন আফতাব, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা:
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের প্রবাস ফেরত রেজাউল ইসলামের সাম্প্রতিক সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই গ্রামের বাসিন্দা মোঃ মেহেদী হাসান। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি রেজাউলের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনেন এবং তার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে দাবি করেন।
লিখিত বক্তব্যে মেহেদী হাসান জানান, তার চাচা আবুল কাশেম ও কামাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে অবস্থান করছেন এবং সেখানেই কর্মরত রয়েছেন। রেজাউল ইসলাম দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় এবং আর্থিক সচ্ছলতার আশায় কুয়েতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। সে তার চাচাতো দুলাভাই মাসুদ এবং চাচা কামালের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী ৪,৩০,০০০ (চার লক্ষ ত্রিশ হাজার) টাকার বিনিময়ে তাকে ড্রাইভিং পেশায় কুয়েতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
মেহেদী আরও জানান, চুক্তির অংশ হিসেবে রেজাউল নগদ এক লক্ষ টাকার একটি চেক প্রদান করে এবং বাকির পরিমাণ পরবর্তীতে কুয়েতে গিয়ে আয় করে পরিশোধের আশ্বাস দেয়। এরপর তার চাচা কামাল হোসেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে রেজাউলকে কুয়েতে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে রেজাউল ড্রাইভিং পরীক্ষায় পরপর দুইবার ব্যর্থ হয়। পাশাপাশি, কুয়েতি নিয়ম ভঙ্গ করে অবৈধ সিম ব্যবহারের কারণে সে পুলিশের হাতে আটক হয়।
পরবর্তীতে, কামাল হোসেন নিজ দায়িত্বে তাকে থানা থেকে মুক্ত করে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন এবং ড্রাইভিং পেশার পরিবর্তে ফার্মের কাজে যুক্ত হতে বলেন। তাছাড়া ভবিষ্যতে ভালো ভিসা পাওয়ার সুযোগেও সহায়তা করার আশ্বাস দেন। কিন্তু রেজাউল নানা অজুহাতে দেশে ফেরার কথা বললে এবং আত্মহত্যার হুমকি দিলে বাধ্য হয়ে কামাল হোসেন তাকে নিজ খরচে দেশে পাঠান।
দেশে ফিরে এসে রেজাউল পূর্ব প্রতিশ্রুত বকেয়া টাকা পরিশোধের ব্যাপারে গড়িমসি শুরু করে। মেহেদীর দাবি, বিদেশ থেকে ফেরার আগে রেজাউলের কাছ থেকে একটি ভিডিও রেকর্ড নেওয়া হয় যেখানে সে নিজ ইচ্ছায় বাকি টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু দেশে ফিরে সে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের বিরুদ্ধে “মিথ্যা ও বানোয়াট” তথ্য প্রকাশ করে।
মেহেদী হাসান জানান, তার পরিবারের বিরুদ্ধে এই সংবাদ সম্মেলন নিছক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রবাসে থাকা আত্মীয়দের সম্মান ক্ষুণ্ণ করার হীন প্রচেষ্টা। তিনি আরও বলেন, “রেজাউলের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে বৈধ আকামা, ড্রাইভিং লার্নারের কপি এবং টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি সংবলিত ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে, যা প্রমাণ করে তার বক্তব্য সত্য নয়।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষ অংশে মেহেদী হাসান প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আমি সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে এবং মিথ্যাবাদী রেজাউলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”