সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে শুকনা হলুদ আমদানি বেড়েছে: কমেছে মসুর ডাল আমদানি

আবু সাইদ বিশ^াস, সাতক্ষীরাঃ সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে শুকনা হলুদ আমদানি বেড়েছে। অন্যদিকে কমেছে মসুর ডাল আমদানি। চলতি ২০২৪—২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই—এপ্রিল) হলুদ আমদানি বেড়েছে ৩ হাজার ৫৪৭ টন। ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় সম্প্রতি শুকনা হলুদের আমদানি বেড়েছে। বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই—এপ্রিল পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে মোট শুকনা হলুদ আমদানি হয়েছে ২৫ হাজার ৭৯৯ টন, যার মূল্য ছিল ৪৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময় এ বন্দর দিয়ে ৩৩৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা মূল্যের ২২ হাজার ২৫২ টন হলুদ আমদানি হয়েছিল।
এ বিষয়ে ভোমরা বন্দরের মসলাজাত পন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবু হাসান জানান, তার প্রতিষ্ঠানে সম্প্রতি শুকনা হলুদ আমদানি বেড়েছে ২০—২৫ শতাংশ। এদিকে আমদানি বাড়লেও সাতক্ষীরার মসলা বাজারগুলোয় গুঁড়া হলুদের দাম কমেনি। গতকাল জেলা সদরের সুলতানপুর বড় বাজারে মসলাজাত পণ্য বিক্রয় প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাম—ভাগ্না ভাণ্ডারে গুঁড়া হলুদ বিক্রি হয়েছে ২৮০— ৩০০ টাকা কেজি দরে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী জহুরুল হক জানান, দেশে গুঁড়া হলুদের যে চাহিদা আছে তার একটি বড় অংশ আমদানিনির্ভর। ফলে আমদানি খরচ না কমলে তার প্রভাব বাজারে পড়বে না।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসরাণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ৬০০ টন হলুদ উৎপাদন হয়েছে। তবে হলুদ দীর্ঘমেয়াদি ফসল হওয়ার কারণে কৃষকরা এটি উৎপাদনে কম আগ্রহী। অন্যদিকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে মসুর ডাল আমদানি কমেছে। ২০২৪—২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই—এপ্রিল) গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কৃষিপণ্যটির আমদানি কমেছে ১ হাজার ৭৬৭ টন। আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে ভালো চাহিদা না থাকায় মসুর ডাল আমদানি কমেছে।
বন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জুলাই—এপ্রিল পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে মসুর ডাল আমদানি হয়েছে ৬২২ টন। যার আমদানি মূল্য ছিল ১০ কোটি ১১ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময় ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ৩৬ কোটি ১১ লাখ টাকা মূল্যের ২ হাজার ৩৮৯ টন মসুর ডাল আমদানি হয়েছিল। ভোমরা স্থলবন্দরের কৃষিপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স গনি অ্যান্ড সন্সের ব্যবস্থাপক অশোক কুমার বলেন, ‘দেশের বাজারে চাহিদা না থাকায় আমার প্রতিষ্ঠানে সম্প্রতি মসুর ডাল আমদানি কমানো হয়েছে। বাজারে সব ধরনের সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় ডালজাতীয় পণ্যের চাহিদা কমেছে।’ এদিকে আমদানি কমলেও সাতক্ষীরার বাজারে স্থিতিশীল আছে মসুর ডালের দাম। গতকাল সাতক্ষীরা জেলা সদরের সুলতানপুর বড় বাজারের কয়েকটি ডাল ও মসলাজাত পণ্য বিক্রয় প্রতিষ্ঠান ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। সুলতানপুর বড় বাজারের মেসার্স ঠাকুর স্টোরে গতকাল আমদানীকৃত চিকন মসুর ডাল কেজিপ্রতি ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এ সময় মোটা ডালের দাম ছিল কেজিতে ১০০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী দুলাল চন্দ্র সাহা বলেন, ‘এক থেকে দেড় মাস আগেও একই দামে ডাল বেচাকেনা হয়েছে। বাজারে শাকসবজির সরবরাহ থাকায় ডালের চাহিদা কিছুটা কমে গেছে।’
সাতক্ষীরা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি বিপণন কর্মকর্তা এসএম আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, বাজারে সব ধরনের ডালের দাম স্থিতিশীল আছে।

 

Check Also

ছোট গাছে সাত ছড়া সৌদি খেজুর, লাভের আশা সাতক্ষীরার চাষির

সাতক্ষীরা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের কালীগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নে যখন পৌঁছালাম, সূর্য তখন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।