মোঃ হাফিজ: ক্রাইমবাতা রিপোট: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা উপেক্ষা করে প্রভাব খাটিয়ে সাতক্ষীরা সিটি কলেজ দখল নিয়েছে একটি চক্র বলে অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম বহিভূত ভাবে অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে একই কলেজের জুনিয়র শিক্ষক মনিরুজ্জামান। যিনি বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ হত্যা মামলার ১৮নং চার্জশীট ভুক্ত আসামী। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে আওয়ামী লীগের নেতাদের আর্শীবাদ পুষ্ট হয়ে যান মনিরুজ্জামান। জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদের শেল্টারে তৎকালীন সিটি কলেজের বিএনপি জামায়াত অনুসারী শিক্ষকদের কোনঠাসা করে সাবেক অধ্যক্ষ ইমদাদ কে মনিরুজ্জামানের পেটুয়া বাহিনী দিয়ে লাঞ্ছিত করে কলেজ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে আ’রীগ নেতা আবু আহমেদ কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসান। একই কলেজের গণিতের শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র বৈরাগী হত্যা মামলায় মনিরুজ্জামান ১ নং আসামী হলেও আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে আলোচিত এ হত্যা মামলাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেন। এসব অভিযোগ করেন মানববন্ধনে বক্তরা। ঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে কলেজ চত্বরের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ মনিরুজ্জামানের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা, অভিভাবক ও শিক্ষক সমাজ এতে অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কলেজটির সহকারী অধ্যাপক মোঃ ইউনুচ আলী (বাবু), সহকারী অধ্যাপক ডঃ মিজানুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক মোঃ আঃ ওয়াদুদ, প্রভাষক গাজী রেজাউল করিম, সাধারণত ছাত্রদের মধ্যে মোঃ সাদ্দাম হোসেন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রনেতা মোঃ ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ।
মানববন্ধনে বক্তরা আরো বলেন, সম্প্রতি সিটি কলেজের বৈধ অধ্যক্ষ ড. শিহাব উদ্দীন কে কলেজ থেকে বের করে দিয় বিএনপি পন্থি দাবী করে তিনি অক্ষক্ষের চেয়ারে বসেন। অধ্যক্ষ ড. শিহাব উদ্দীন জীবনের ভয়ে কলেজে না আসায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে কলেজের উপাধাক্ষ্য আলতাফ হোসেন। কিন্তু আলতাফ হোসেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হলে মনিরুজ্জামানের পেটুয়া বাহিনী বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন কে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে অপাগরতা প্রকাশ করিয়ে ফিল্মি স্টাইলে অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে নেন মনিরুজ্জামান।
বক্তরা বলেন, জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী কলেজের অধ্যক্ষের পদ শূন্য হলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করবেন উপাধ্যক্ষ। যদি তিনি অপারগ হন তাহলে জ্যোষ্ঠতার ভিত্তিতে একজন সিনিয়র শিক্ষক দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু মনিরুজ্জামান সে তালিকায় ১৩ নাম্বার সিরিয়ালে থাকলেও অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ দখল করে নেন। বিগত ফ্যাস্টিট আমলে যেভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখল করা হতো সেই পদ্ধতি কাজে লাগিয়েই মনিরুজ্জামান বাগিয়ে নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ। এতে সাতক্ষীরার শিক্ষক সমাজের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, চোর তাড়িয়ে যেন ডাকাত আনা হয়েছে। অবিলম্বে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সাতক্ষীরা সিটি কলেজে যোগ্য ব্যক্তিকে অধ্যক্ষের পদে বসানোর দাবি তাদের। তারা বলেন, ফ্যাস্টিট সরকারের পতনের পর মনিরুজ্জামান জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের সকল নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে অবৈধভাবে একটি এডহক কমিটির অনুমোদন করিয়ে আনেন। ওই এডহক কমিটির সভাপতি করা হয়েছে মনিরুজ্জামানের চাচা অধ্যাপক নওশাদ আলম এবং আরেক চাচা আক্তারুল ইসলাম কে করা হয়েছে বিদ্যুৎসাহী সদস্য। পরবর্তীতে ওই অবৈধ কমিটিই তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে কলেজের একটি বিশেষ সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক মনিরুজ্জামান জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। তিনি নিয়ম মেনেই অধ্যক্ষ হয়েছেন। তাকে হেয় করতেই এ ধরনের ষড়যন্ত্র।
