শ্যামনগর ( সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দীর্ঘ ২ যুগ পরে পিতৃ স্বীকৃতি পেলেন রাশিদুল ইসলাম। তিনি ৬ নং রমজাননগর ইউনিয়নের পাতড়াখোলা গ্রামের মৃত ছামছুর রহমান মোড়লের দ্বিতীয় স্ত্রী মোছাঃ রাশিদ বেগম এর একমাত্র পুত্র। ওয়ারিশ কায়েম সনদের জটিলতা কাটিয়ে মৃত ছামছুর রহমান মোড়লের ১ম স্ত্রীর সন্তানদের দ্বারা চরম নির্যাতিত হয়ে অবশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপে পিতৃ স্বীকৃতি পেলেন এক যুবক। ন্যায় বিচার করায় প্রশংসায় ভাসছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: রনী খাতুন। সূত্রে প্রকাশ, শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের ২১-০৫-২০২৫ ইং তারিখের ০৫.৪৪.৮৭৮৬.০০০.০০.০০২.২৪.৯০৫ নং স্মারক পত্র মোতাবেক ওয়ারিশ সনদ হয় যে, পাতড়াখোলা গ্রামের মৃত ছামছুর রহমান মোড়লের ১ম স্ত্রী মৃত ছকিনা বেগমের পুত্র মো: আ: রশিদ, মোঃ মাকছুদুর রহমান, মোঃ মিজানুর রহমান, কন্যা মোছাঃ ছামছুন নাহার,২য় স্ত্রী বা শেষ স্ত্রী মোছা: রাশিদা বেগমের একমাত্র পুত্র মোঃ রাশিদুল ইসলাম। মৃত ছামছুর রহমান মোড়লের ০৪ পুত্র, ০১ কন্যা ও ০২ স্ত্রী মোট ০৭ জন ওয়ারিশ।এ ছাড়া তার আর কোন ওয়ারিশ নেই। রমজাননগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হামিদ লাল্টু স্বাক্ষরিত এ তথ্য জানা যায়। দীর্ঘদিন ওয়ারশ কায়েম সনদ বঞ্চিত মোঃ রাশিদুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদ থেকে
ওয়ারশ কায়েম সনদ না পেয়ে আইনী প্রক্রিয়ায় শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে ওয়ারশ কায়েম সনদের প্রার্থনা করে লিখিত আবেদন করেন। যার প্রেক্ষিতে গত ০৯/০৪/২০২৫, ১৫/০৪/২০২৫, ০৭/০৫/২০২৫ এবং ১৩/০৫/২০২৫ তারিখে বাদী ও বিবাদী উভয়ের উপস্থিতিতে তদন্ত বা শুনানী শেষে এ সিদ্ধান্ত জানান। শুনানীঅন্তে প্রমান মেলে প্রাথমিক(মক্তব), দাখিল, আলিম, ফাজিল, বি,এ, অনার্স, কামিল ১ম বর্ষের সকল কাগজ পত্রে, জাতীয় পরিচয়পত্র, নাগরিক সনদপত্র, গণস্বাক্ষরিত(৯৪জন) প্রত্যয়নপত্র, স্থানীয় ওয়ার্ডে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় পর্যালোচনায় দেখা যায়,শামছুর রহমান মোড়ল এবং রাশিদা বেগমের পুত্র রাশিদুল ইসলাম। তাছাড়া সরকারি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী (কার্ড নম্বর- ২৪, ইউনিয়ন, রমজাননগর), বিধবা ভাতা বই, ব্যাংক হিসাব নম্বর সহ সবকিছু পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাশিয়া বেগমের স্বামী শামছুর রহমান মোড়ল। নানা চক্রান্ত ও বাধার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি। মৃত শামসুর রহমান মোড়লের দ্বিতীয় স্ত্রীর একমাত্র সন্তান রাশেদুল ইসলামকে প্রথম স্ত্রীর সন্তানেরা ওয়ারিশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করে আসছিল। রাশিদুল ইসলাম ন্যায়বিচারের আশায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। শেষ পর্যন্ত শ্যামনগরের বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনী খাতুন এর আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দীর্ঘ তদন্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হলে মোঃ রাশিদুল ইসলাম ওয়ারেশ কায়েম সনদ পাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে পিতৃ স্বীকৃতি পেল। রাশিদুল ইসলাম অতিকষ্টে মসজিদে ইমামতি ও প্রাইভেট পড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।
পৈতৃক সম্পত্তি যথাযথ পেলে কয়েক কোটি টাকার সম্পদই তার জীবনে নতুন দ্বার উন্মোচন করে। তবে রাশিদুল ইসলাম ও তার পরিবার দারুন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই ঘটনার মাধ্যমে একটি দীর্ঘ দিনের অন্যায়ের অবসান ঘটল। স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন ইউএনও রনী খাতুনের সাহসী ও ন্যায়নিষ্ঠ ভূমিকায়।
