ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট: ঢাকা: ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে, কোনো পরাশক্তির পরামর্শের প্রয়োজন নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার সকালে তিনি এসব কথা বলেন।চক্রান্তের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
চক্রান্তের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি, তবে তা সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরানোর চক্রান্ত চলছে। কোথায় কোথায় এইসব চক্রান্তের বৈঠক চলছে আমরা জানি, পর্যবেক্ষণ করছি খোঁজ খবর আমাদের কাছে আছে। চক্রান্তের ফাঁদে কেউ পা দেবেন না। আপনারা (নেতাকর্মীরা) ঠান্ডা মাথায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধের শপথে সামনে এগিয়ে যাবেন। আমরা বিজয়ী হবো এটা যখন প্রতিপক্ষ (বিএনপি) বুঝতে পেরেছে ঠিক তখনই তারা চক্রান্তের চোরাগলি বেছে নিয়েছে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি আল্লাহর রহমতে, কোনো অপশক্তি আমাদের বিজয়কে ঠেকাতে পারে না।’
পাকিস্তান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লেগেই আছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনও নেত্রীর কারাদণ্ড হয়, তখন পাকিস্তানের পার্লামেন্ট সেটা নিয়ে কটাক্ষ করার দুঃসাহস কোথা থেকে পায়? লেগেই আছে এরা, পাকিস্তানের বন্ধুরা, এরা আমাদের ভালো চায় না।’
এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্লোগান দেওয়ার সময় উস্কানিমূলক স্লোগান দেবেন না। ভাষণ দেওয়ার সময় অশান্তিমূলক ভাষণ দেবেন না। দায়িত্বশীল কথা বলবেন, লাগামহীন কথা বলবেন না। ঠান্ডা মাথায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে আমরা কাউকে আক্রমণ করবো না। আক্রান্ত হলে পাল্টা জবাব দেব। কাজেই উস্কানিমূলক কোনও বক্তব্য দিবেন না। সারা দেশের নেতাকর্মীদের দায়িত্বশীল হতে হবে। এটাই আমরা আশা করি।’
–0-
ঢাকা: বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বেগম জিয়কে বাদ দিয়ে সরকার আগামী নির্বাচনে যেতে চায়। কিন্তু তারা আধা পথেও যেতে পারবে না। জনগণ খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন মেনে নেবে না।
শনিবার (৩ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল।
মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার নিজেদের ডিজিটালের কথা বলেন। রায়ের সার্টিফাইট কপি ৫ দিনের মধ্যে পাওয়ার কথা থাকলেও পেতে লেগেছে ৯ দিন। হাইকোর্ট নথি তলব করার পর ১০ দিন কেটে গেছে। ৩ কিলোমিটার পথ নথি আসতে কত সময় লাগে? এতেই বুঝা যায় সরকার উদ্দেশ্যেমূলকভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে আটকিয়ে রেখেছে।
বিএনপি’র এই নীতিনির্ধারক বলেন, সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। সরকার আমাদের মানববন্ধন, অনশন, কালো পতাকা প্রদর্শনে বাধা দিয়েছে। তারা আমাদের সভা-সমাবেশ অনুমতি দিচ্ছে না। আমরা ১২ তারিখ সমাবেশের অনুমতি চেয়েছি। আশা করি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং সমাবেশের অনুমতি দেবে।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবেন? আপনাদের সে আশা বুমেরাং হয়ে গেছে। তাকে সাজা দেয়ার পর ভাবমূর্তি আরও বেড়ে গেছে। তিনি জনগণের সহানুভুতি পাচ্ছেন। তার প্রতি জনগণ আস্থা রাখছেন।
বিএনপি’র এই নেতা বলেন, সরকার তাদের পকেটভারী করার জন্য গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোন যুক্তি নাই। শুধু লুটপাট করার জন্যই দাম বাড়ানো কথা বলছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের মতো পাতানো নির্বাচন জনগণ হতে দিবে না। জনগণ এখন আর আওয়ামী লীগের কথা বিশ্বাস করে না। তারা বলেছিল এটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। কিন্তু পরে তাদের কথা রাখেনি। বিদেশী বন্ধুরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিদেশীদেরও বারবার ধোকা দেয়া যাবে না।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আওয়ামী লীগ ৭ মার্চ জনসভা করবে। এরপরে এরশাদ করবে। আমরা ১২ তারিখ সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছি। আমাদের অনুমতি দিন। অন্যথায় বুঝবো সরকার এক দেশে দুই আইন চালু করেছে। এবং বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়াই নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের সমাবেশে স্মরণ কালের জনসভা হবে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হাফেজ আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক শাহ মাওলানা নেছারুল হক প্রমুখ। তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়া এতিমদের টাকা মেরে খাওয়ার লোক না। তিনি যদি কখনো বলতেন আমার কোন কাজের জন্য ২ কোটি টাকা দরকার বিএনপি অফিসের সামনে যদি দুটি ড্রাম রাখা হতো লাইন ধরে মানুষ এক ঘন্টার মধ্যে এর বেশি টাকা দিতো।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা এখন দেশের বাইরে সেকেন্ড হোম বানিয়ে রেখেছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে, সুইসব্যাংকে টাকা রাখছে। ৬৯ সালে কোনো নেতা জেলের বাইরে ছিলেন না। তারা প্রত্যেকেই জেলে ছিলেন। তাই বলে কি তারা ৭০ এর নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারে নাই।
মানববন্ধনে বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, বেগম জিয়া আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। এই অবৈধ সরকার অন্যায়ভাবে তিনবারের এই প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারের ভেতর আটকিয়ে রেখেছে। দেশে ৫ জানুয়ারির মতো আর কখনোই একতরফা নির্বাচন হবে না। আমরা বেগম জিয়াকে নিয়েই আগামী নির্বাচনে অংশ নেব।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মো. আবু জাফর, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরো অনেকে।