ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক :দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে কোনো আপস নয়। চুনোপুঁটিও ফাঁক গলে যেতে পারবে না। বিমানবন্দরে পাঁচ বছরের শিশুকে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখার পর সাফাই হোয়াইট হাউসের। ৯/১১–এর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানন্দরগুলিতে নিরাপত্তার নামে বাড়াবাড়ির অভিযোগ উঠেছে আগেও। তবে নয়া অভিবাসী নীতি ঘোষণার পর আরো এক কদম এগোল নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে ইরানি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এক পাঁচ বছরের শিশুকে দীর্ঘক্ষণ বিমানবন্দরে আটকে রাখা হলো।
ওয়াশিংটনের ডালস বিমানবন্দরের ঘটনা। ইরানি বংশোদ্ভূত শিশুটি মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা। জন্মদিনে এক আত্মীয়র সঙ্গে ইরান থেকে ওয়াশিংটন ফিরছিল সে। কিন্তু ডালস বিমানবন্দরে নামতেই বিপত্তি বাঁধে। নয়া অভিবাসী নীতি মেনে শতাধিক মানুষের সঙ্গে তাকেও সন্দেহভাজন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। এদিকে ছেলের আসার কথা জানিয়ে আগেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দিয়েছিলেন তার মা। তাসত্ত্বেও বিমানবন্দরের বাইরে ছেলের দেখা না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। ততক্ষণে বিমানবন্দরের বাইরে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর ছেলের দেখা পান তিনি। ছেলে বিমানবন্দরের বাইরে আসতেই কোলে তুলে নেন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।
আন্দোলনকারীদের ক্যামেরায় গোটা ঘটনাটি ধরা পড়ে। সেটি সামনে আসতেই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ট্রাম্প সরকারের নিন্দায় সরব হন মেরিল্যান্ডের ডেমোক্র্যাটিক সেনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন। আগে থেকে নোটিশ দেয়া সত্ত্বেও শিশুটিকে কেন হেনস্থা করা হল জানতে চান।
তবে ক্ষমা চাওয়া তো দূর, এই ঘটনার জন্য বিন্দুমাত্র আফশোস ধরা পড়েনি সরকারি আমলাদের গলায়। উল্টে শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক কেউই দেশের নিরাপত্তার উর্দ্ধে নয় বলে দাবি করেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার।
তার মতে, ‘প্রেসিডেন্টের মতে দেশের নিরাপত্তাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কথা ভেবেই আগামী ৯০ দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এতে অন্যায়ের কী আছে? শরণার্থী প্রবেশ বন্ধের ঘোষাণার পর সপ্তাহান্তে প্রায় ৩ লাখ ২৯ হাজার মানুষ আমেরিকায় পা রেখেছেন। তাদের মধ্যে ১০৯ জনকে আটক করা হয়। নিশ্চয়ই কোথাও গলদ চোখে পড়েছিল। বয়স, লিঙ্গ এসবের বিচার করতে বসলে তো কাজই করা যাবে না।’
ক্ষমতায় আসার এক সপ্তাহ পর, গত ২৭ জানুয়ারি ইরাক, ইরান, সুদান, সিরিয়া, সোমালিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন— এই সাতটি মুসলিম দেশ থেকে আসা মানুষের আমেরিকায় প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিরিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের প্রবেশও সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।