পাইকগাছা উপজেলায় ৫ লাখ মানুষের জন্য চিকিৎসক ৫ : স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মক ব্যাহত

জি,এ, গফুর, পাইকগাছা ॥
পাইকগাছা উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ মানুষের জন্য ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ১০ শয্যা বিশিষ্ট কপিলমুনি হাসপাতালের চিকিৎসক ও জনবল সংকটে স্বাস্থ্য সেবা ভেঙ্গে পড়েছে। দুই হাসপাতালে ২৪ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৫ চিকিৎসক দায়িত্ব পালনে হিমশিম খাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ সংকট নিয়ে বৃহস্পতিবারে জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডাঃ বাহারুল আলমের উপস্থিতিতে গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। এ্যানেসথেসিয়া সার্জন না থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ। এ সুযোগে ক্লিনিক মালিকরা লুফে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। সন্তান সম্ভাবা গর্ভবতি মায়েরা সহ বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র রোগীরা।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে হাসপাতালের কয়েকজন ডাক্তার বদলী হয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণে যাওয়ায় এ দুরাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ডাক্তার সংকট, এক্স-রে মেশিন অচল, প্রয়োজনীয় ফার্মাসিট, অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক, আয়া, ওয়ার্ডবয়, পরিচ্ছন্নতা কর্মী না থাকায় সাস্থ্য সেবা দারুনভাবে ব্যাহতের কথা স্বীকার করে ও দিন-রাত ডাক্তারদের পরিশ্রমের কথা জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডাঃ প্রভাত কুমার দাশ এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিক বার চিঠি-চালাচালির পরেও ডাক্তার ও জনবলের অভাব মিটছে না। তবে আগামী ১৩ আগস্টের বোর্ড মিটিং-এ বিষয়টি তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কপিলমুনির ১০ শয্যার হাসপাতালের চিকিৎসক সংকটসহ প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু বর্তমানে তা আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। সুত্র জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মঞ্জুরীকৃত বিভিন্ন পদ-পদবীর প্রথম শ্রেণীর ২২ চিকিৎসক, ২য়- ২৪, ৩য়- ১৬০ ও ৪র্থ শ্রেণীর ৩২, মোট ২৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৫ চিকিৎসক স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডাঃ প্রভাত কুমার দাশ, ডাঃ সুজন কমার মন্ডল, ডাঃ প্রশান্ত কুমার মন্ডল, ডাঃ সঞ্জয় কুমার মন্ডল ও ডাঃ মিঠুন দেবনাথ দায়িত্ব পালন করছেন। ৮৬ শূন্যপদ ও ১৫২ জনবল নিয়ে হাসপাতাল চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। কপিলমুনি ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ২ জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে সেখানে ডাক্তার শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া আগড়ঘাটা, গদাইপুর, কাটিপাড়া, চাঁদখালী, গড়ইখালী, বাঁকা ভবানীপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ লতা, দেলুটি, গদাইপুর, রাড়–লী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার শূন্য ও প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব রয়েছে । এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ হাসপাতালে চরম ডাক্তার সংকটের কারণে সিজারিয়ানসহ স্বাস্থ্যসেবা প্রত্যাশীরা বিভিন্ন ক্লিনিকের দারস্থ হয়ে বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে গোল টেবিল বৈঠকের কথা উল্লেখ করে, কেন্দ্রীয় বিএমএর দপ্তর সম্পাদক ডাঃ মোহাঃ শেখ শহীদউল্লাহ এ প্রতিনিধিকে বলেন, সমস্যা-সংকট নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা হয়েছে। তারা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এএসএম আঃ রাজ্জাক বলেন, পাইকগাছা ও কপিলমুনি হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবার দুরাবস্থার কথা ইতোমধ্যে পরিচালককে জানানো হয়েছে। অচিরেই ডাক্তার সংকট মিটে যাবে বলে তিনি আশ্বস দিয়েছেন।

 

Check Also

জাতীয়করণের দাবিতে আউটসোর্সিং কর্মীদের শাহবাগ অবরোধ

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর একের পর এক দাবি নিয়ে শাহবাগ অবরোধ করছেন আন্দোলনকারীরা। এবার চাকরি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।