বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র: রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশের যাত্রাপথের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আসন্ন সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে পছন্দের কেউ নেই, তবে দেশটি দেখতে চায় যে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এখানে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের নিজেদের সরকার তারাই নির্বাচন করুক, এটাই যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে এক বছর পূর্তি উপলক্ষে দেওয়া এক বার্তায় এমন মন্তব্য করে দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, গণতন্ত্রকে সমর্থন করা এবং ব্যক্তি অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পথ চলা আরো নিরাপদ, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়তে সাহায্য করে।

তিনি মনে করছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব। এই দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সরকার, মিডিয়া থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নাগরিক সমাজ থেকে রাজনৈতিক দল, প্রত্যেকেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাদের কেউ যদি নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় বা তাদের কেউ যদি অন্যকে তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়, তাহলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। এছাড়াও বিক্ষোভকারী, রাজনৈতিক দলগুলো, সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ প্রত্যেকের আইনের শাসনকে সম্মান করা এবং সহিংসতা, হয়রানি এবং ভয় দেখানো থেকে বিরত থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাধীনতার মাত্র ৫১ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে পিটার হাস বলেছেন, আমি অবাক হই যে মাত্র ৫১ বছরে বাংলাদেশ কতোটা এগিয়েছে! আমি এমন এক বাংলাদেশকে দেখি যারা শুধু স্বাধীনতা আর গর্বকে সম্বল করে যাত্রা শুরু করেও আজ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আমি কল্পনা করতে পারি, আগামী ৫১ বছরে বাংলাদেশ আরো কতদূর এগুবে। আগামী কয়েক দশকে একটি সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক উন্নত দেশ হয়ে ওঠার জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার সবই বাংলাদেশের আছে।

তবে, সামনের রাস্তায় বাংলাদেশের জন্য বহু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে স্মরণ করিয়ে দিয়ে মার্কিন দূত বলেছেন, “এই প্রতিবন্ধকতাগুলো পার হয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পরিচর্যা, সুশাসনের উন্নতি, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জনগণকে শিক্ষিত করে তোলার পদক্ষেপ নিতে হবে।”

পিটার হাস বলেছেনঃ আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের পক্ষে অগ্রগতির এই ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব, যদি বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য যতটা সম্ভব আমন্ত্রণমূলক ব্যাবসায়িক পরিবেশ তৈরি করে।

আরো অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে যদি বাংলাদেশে নিম্নলিখিত সংস্কারগুলো ঘটে : দক্ষ কর্মিবাহিনী গড়ে তোলার আরো ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাদের অধিকারের সুরক্ষা দেওয়া; এমন একটি আইনি কাঠামো তৈরি করা, যা ব্যবসায়-সহায়ক; দুর্নীতির কারণে গোপন খরচ (লুকানো কর!) ও অপ্রয়োজনীয় আমলাতান্ত্রিকতা দূর করা; সব ধরনের মেধা সম্পদের সুরক্ষা দেওয়া এবং আরো অবাধে মুদ্রা রূপান্তরের অনুমতি দেওয়া।

এই ধরনের এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক সংস্কার বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।

Check Also

‘দেশকে কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে’

আগস্ট বিপ্লবকে অর্থবহ ও মজবুত ভিত্তি দিতে এবং একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জ্ঞান ও বুদ্ধিভিত্তিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।