ঢাকা, ১২ মে, এবিএন ওয়ার্ল্ড : ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরুধী অপরাধের জন্য জামায়াত প্রধান মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের ব্যাপারে ইসলামাবাদের প্রতিক্রিয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, তাদের বিবৃতির বিষয়বস্তু আবারো নিশ্চিত করলো তিনি ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের’ বিরুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাদের পক্ষে বিশ্বাসঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করার পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বিষয়ে মন্তব্য করতে বলা হলে গতরাতে তিনি বলেন, সর্বপ্রথম ইসলামাবাদের বিবৃতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পরিপূর্ণ হস্তক্ষেপ। যা তারা বারংবার পদ্ধতিগতভাবেই করে যাচ্ছে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ইসলামাবাদের বিবৃতির বিষয়ে এখন সুস্পষ্ট যে নিজামী ১৯৭১ সালে কুখ্যাত আলবদর মিলিশিয়া বাহিনীর প্রধান হিসেবে বিম্বাস ঘাতকতা করেছে। এমনকি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুজিবনগর সরকার কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পরও পাকিস্তানী সেনাদের পক্ষে অস্ত্র হাতে নিয়েছিল। তিনি বলেন, তাদের বিবৃতিতে আবারো প্রমাণিত হলো যে নিজামী তাদেরই (পাকিস্তানী) একজন ছিলেন। তার বিষয়ে তারা ভিত থাকলে নাগরিক হিসাবে তাকে পাকিস্তানে নিয়ে যেতে পারতো।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইেটে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের আগে সংঘটিত কথিত অপরাধের জন্য বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করায় ইসলামাবাদ অত্যন্ত মর্মাহত। এতে বলা হয়েছে, তার একমাত্র অপরাধ হচ্ছে পাকিস্তানের সংবিধান ও আইন সমুন্নত রাখা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঢাকা, নয়াদিল্লী ও ইসলামাবাদের মধ্যে ১৯৭৪ সালের ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী ক্ষমার পদক্ষেপ হিসেবে বিচার প্রক্রিয়া না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল এবং তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত চুক্তি অনুযায়ী অঙ্গীকার সমুন্নত রাখা।
চুক্তির বিষয়ে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানকে তাদের সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিল চুক্তির এই শর্ত অনুযায়ী যে, তারা দেশে ফিরে যাওয়ার পর সেখানে তাদের বিচার করা হবে। তিনি বলেন, চুক্তির কোথাও বলা হয়নি যে, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানী সৈন্যদের সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধকারী নাগরিকদের বিচার করতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, আমরা বরং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার না করায় চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করছি। একই সাথে তাদেরও বিচার দাবি করেন তিনি।
এবিএন/বৃহস্পতি/জাতীয়/এমআর