পুরুষদের থেকে ৩০ মিনিট বেশি ঘুমান মহিলারা!

Sleepingঢাকা, ১৩ মে, এবিএন ওয়ার্ল্ড : একটি অ্যাপ থেকে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বলছেন সিঙ্গাপুর ও জাপানের মানুষের তুলনায় গড়ে প্রায় এক ঘণ্টা বেশি ঘুমান হল্যান্ডের মানুষ।সায়েন্স অ্যাডভান্সেস নামে একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে তাদের যে গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে তাতে বলা হচ্ছে মহিলারা নিয়মিতভাবে পুরুষদের থেকে বেশি ঘুমায়। আর সবচেয়ে কম ঘুমান মধ্যবয়সী পুরুষরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের ঘুমের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই গবেষণা বিশ্বব্যাপী মানুষের ঘুমের সংকট নিয়ে ভবিষ্যৎ গবেষণায় সাহায্য করবে।
যারা বিমানে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন, এবং এক দেশ থেকে আরেক দেশে পৌঁছে সময় বদলের কারণে ঘুমের যাদের অসুবিধা হয় যাকে ‘জেট ল্যাগ’ বলা হয়, তা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে আমেরিকার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ২০১৪ সালে এনট্রেন নামে একটি কম্পিউটার অ্যাপ চালু করেন। তাদের মূল লক্ষ্য হল এই জেট ল্যাগ সমস্যার সমাধান।sleep-one
এই সমীক্ষা থেকে তারা দেখেছেন জাপান এবং সিঙ্গাপুরের মানুষ ঘুমান গড়ে ৭ ঘণ্টা ২৪ মিনিট। আর নেদারল্যান্ডসের মানুষ ঘুমায় গড়ে ৮ ঘণ্টা ১২ মিনিট। ব্রিটেনের মানুষ ঘুমায় গড়ে ৮ ঘণ্টারও কম যা ফ্রান্সের মানুষের গড় ঘুমের সময়ের থেকে সামান্য কম।
যে দেশের মানুষ যত রাত জাগে স্বভাবতই তাদের ঘুমের গড় সময় সেই হিসাবে কমে। বিজ্ঞানীরা বলছেন ঘুমের গড় সময় হিসাব করার ক্ষেত্রে সকালে ঘুম থেকে জাগার সময়টা খুব একটা তাৎপর্যপূর্ণ নয়। গবেষক প্রফেসর ড্যানিয়েল ফর্জার বলছেন “মানুষের জীবনযাপন যেভাবে বদলে গিয়েছে, তাতে অনেক সময় আমরা অনেক রাত অবধি জেগে থাকছি, কিন্তু আমাদের শরীরের ভেতর যে ঘড়ি কাজ করে তা আমাদের সকালে ঠিক সময়ে ওঠার জন্য ভেতর থেকে কাজ করছে। ফলে আমাদের ঘুমের প্রকৃত সময়টা কমে যাচ্ছে। আর এটাই তৈরি করছে নানাধরনের ঘুমের সঙ্কট।”
বিজ্ঞানীরা আরও দেখেছেন মহিলারা বিশেষ করে ৩০ থেকে ৬০-এর মধ্যে যাদের বয়স তারা প্রতি রাতে গড়ে পুরুষদের থেকে অন্তত ৩০ মিনিট বেশি ঘুমায়। আর যেসব মানুষ প্রাকৃতিক সূর্যালোকে বেশিক্ষণ সময় কাটান তারা ঘুমাতে যান তুলনামূলকভাবে আগে। ঘুমের সঙ্গে বয়সের একটা সম্পর্কও বিজ্ঞানীরা দেখেছেন। অল্প বয়সে ছেলেমেয়েদের ঘুম থেকে ওঠা এবং ঘুমতে যাওয়ার সময়ে অনেক তারতম্য রয়েছে। বৃদ্ধ বয়সে এটা অনেক কমে আসে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই গবেষণা থেকে এটা প্রমাণিত যে আমাদের ‘দেহ-ঘড়ি’ আমাদের শারীরিক অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু সামাজিক পরিস্থিতি বেশিরভাগ সময়েই তা অমান্য করে এবং আমরা প্রাকৃতিক নির্দেশ অবজ্ঞা করি। এর দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব সম্বন্ধে বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন এবং তারা বলছেন এর সুদূরপ্রসারী ফল বুঝতে আরও অনেক বছর লেগে যাবে। তবে যারা শিফটে কাজ করেন, এবং তার জন্য যাদের ঘুমের সময়ের হেরফের হয়, তারা যে টাইপ-টু ডায়বেটিসের মত নানাধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার শিকার হন– সে সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা অনেকটাই নিশ্চিত।

এবিএন/শুক্র/লাইফস্টাইল/এমআর

Please follow and like us:

Check Also

ঢাকায় প্রথম মহিলাদের ঈদের জামাত

বাংলায় মুসলমান সমাজে নারীদের প্রতিকূলতার ইতিহাস অনস্বীকার্য। নারীদের শিক্ষা, চিকিৎসা, বিবাহ ও অন্যান্য ব্যাপারে ইসলামের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।