মার্কিন নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠছে ফেইসবুক

US-Elec-FBঢাকা, ১৩ মে, এবিএন ওয়ার্ল্ড : ফেইসবুক বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম প্রধান নিউজ সোর্স হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। সাইটটির দেড়শো কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী প্রতিনিয়ত তাদের নিউজফিডে কোনো না কোনো খবর দিচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় রমরমা ব্যবসা করছে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট। পাশাপাশি, ফেইসবুক বিভিন্ন খবরের সাইটেরও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। সবাই নিজের খবরটি ফেইসবুকে দেয়ার জন্য রীতিমতো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়ে পড়ছেন।
শক্তিশালী গণমাধ্যম হিসেবে এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বার বার আসছে ফেইসবুকের নাম। অনেকেই ধারণা করছেন, মার্কিন নির্বাচনে ভোটারদের প্রভাবিত করতে যেকোনো গণমাধ্যমের চেয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে ফেইসবুক।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ কয়েকদিন আগে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিমালার প্রকাশ্য সমালোচনা করেছেন।
জাকারবার্গের এই সমালোচনা গুঞ্জনকে আরও বেশি উস্কে দিয়েছে। তবে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ। গত মাসে ডিজাইন ও টেকনোলজি ব্লগ গিজমোডোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছুদিন আগে ফেইসবুকের কর্মীরা প্রধান নির্বাহী জাকারবার্গের কাছে জানতে চান, তারা কী নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহযোগিতা করবে?
জবাবে জাকারবার্গ বলেন, তারা নির্বাচনে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তার করতে চান না। তবে এর কয়েকদিন পরই এক ডেভলপার সম্মেলনে তিনি ট্রাম্পের সমালোচনা করে বিতর্ককে উস্কে দেন।
এদিকে, গত সপ্তাহে রিপাবলিকান দলের সিনেটর জন থুন অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন নিয়ে ফেইসবুক একটা অবস্থান নিয়ে ফেলেছে। এলক্ষ্যে বৃহত্তম এ সাইটটিতে বিভিন্ন কনটেন্ট উপস্থাপন করছে। তিনি বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে তদন্ত করে দেখারও আহ্বান জানিয়েছেন। গবেষণা দল ‘ডাটা অ্যান্ড সোসাইটি’র গবেষণা বিশ্লেষক রবিন ক্যাপলন বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ফেইসবুকে যেসব ব্যবহারকারী রয়েছেন তাদের বিভিন্ন ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ রয়েছে। এসবের ভিত্তিতেই তাদের বিভিন্ন কনটেন্ট সরবরাহ করে ফেইসবুক।
তিনি বলেন, তবে ফেইসবুক তার ব্যবহারকারীদের বেশকিছু অপরিচিত কনটেন্টও সরবরাহ করে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি চাইলে নিজেদের ইচ্ছেমতো বিভিন্ন তথ্য ব্যবহারকারীদের উপর চাপিয়েও দিতে পারবে। ফেইসবুকের ট্রেন্ডিং টপিকস লিস্টের ইনচার্জ টম স্টকি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ফেইসবুক সব সময় নিরপেক্ষ ও সামঞ্জস্যতা বজায় রেখে বিভিন্ন কনটেন্ট সরবরাহ করে।
কয়েকদিন আগে ফেইসবুকের অভ্যন্তরীণ ‘কিউ অ্যান্ড এ’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কর্মীদের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। বৈঠকে ঠিক কী কী কথা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানা সম্ভব হয়নি।
তবে, এই বৈঠকে অংশ নেয়া ফেইসবুকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গণতন্ত্রের জন্য ভোট হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী ও সমর্থকেরা ফেইসবুকে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন। নিজের মতামত দিতে পারবেন। এখানে ফেইসবুক শুধু একটি প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। এই ভোটে প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে চলতি বছরের ৮ নভেম্বর। ইতোমধ্যে প্রার্থীরা জোর প্রচারণার মাধ্যমে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এবিএন/শুক্র/তথ্যপ্রযুক্তি/ডেস্ক/জনি

Check Also

আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইল বাংলাদেশ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।