ঢাকা, ১৯ মে : দর্শক টানতে চিয়ার্স লিডার্স’রা এবারও জমিয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল)। এবারও চলছে যথারীতি উদ্যাম তরুণীদের দেহ প্রদর্শনী। তাদেরকে বলা হচ্ছে ‘চিয়ার লিডার্স’। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় শর্ট ভার্সন ক্রিকেটের এটা নবম আসর। এবারের মতো আগের আসরগুলোও জমেছিল দারুণ। তবে চিয়ার লিডার্সরা দর্শকদের বিনোদনের নামে যা করেছে তাতে আনন্দের চাইতে বিরক্তই হয়েছে দর্শকরা। কারণ শিশু ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়ের সামনে এবং কোনো মুসলিম দেশে এ ধরনের সস্তা বিনোদন কারোই কাম্য নয়। বিশেষ করে যারা টেলিভিশনের পর্দ্দায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে খেলা দেখেছেন তাদের যন্ত্রণার সীমা ছিল না। স্বল্প বসনায় চিয়ার্স লিডার্সদের আপত্তিকর নৃত্য ক্রিকেটভক্তদের বিনোদনের পরিবর্তে বিরক্তই করেছে বেশি। যারা খেলার মাঝে নির্মল বিনোদন খুঁজেন তাদের আনন্দের পরিবর্তে বাস্টই হয়েছে বেশি। এই আপত্তিকর নৃত্যর হাত থেকে বাঁচতে বার বার রির্মোট টিপে পরিবর্তন করতে হয়েছে টিভির চ্যানেল।
২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত টি২০ বিশ্বকাপে দর্শকদের আনন্দ দিতে আর খেলোয়াড়দের উৎসাহ যোগাতে ‘চিয়ার্সগার্লস বা চিয়ার্স লিডার্সদের প্রদর্শন শুরু হয়। মাঠে ক্রিকেটাররা চার আর ছক্কা মারলেই মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকা চিয়ার্স লিডার্সরা নড়ে-চড়ে উঠে উদ্ধাম নৃত্য শুরু করে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপের পর এই অপসংস্কৃতি ভর করে আইসিএল আর আইপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে। ভারতের এই দুটি আসরে ‘চিয়ার্স লিডার্সদে’র আরো খোলামেলা করে দেখানো হয়। নারীদের এই খোলামেলা নৃত্য দেখে এক শ্রেণীর মানুষ সস্তা বিনোদন খুঁজলেও বিবেকবান যে কেউ এটাকে সহজে মেনে নিতে পারেনি। দক্ষিণ আফ্রিকা আর ভারতে না হয় এটা মেনে নেয়া যায়। কিন্তু যখন দেখি বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েছে তখন সত্যি অবাক হতে হয়।
ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড়দের ২ ড্রেসিং রুমের সামনে ৩ জন করে মোট ৬ জন চিয়ার্স গার্লস নাচানো হয় পুরো টুর্ণামেন্টে। স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শক ছাড়াও দেশ টিভির সরাসরি সম্প্রচারের কারণে লাখ লাখ ক্রিকেটভক্তরা দেখলো ওয়েস্টার্ন কালচারের মাঝে হারিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। এটা চলতে থাকলে খেলাধুলার মাঝ থেকে থারা নির্মল বিনোদন খুঁজেন তারাও হয়তো মুখ ফিরিয়ে নিবেন। ক্রিকেট কর্মকর্তাদের বুঝতে হবে মাঠে মানসম্মত খেলাহলে দর্শকের অভাব হবে না। আর খেলার মান না বাড়িয়ে চিয়ার্স গার্লস নাচিয়ে বেশি দিন দর্শক ধরে রাখা সম্ভব না। দর্শকরা মাঠে আসে ভালো এবং প্রতিদ্বনিদ্বতাপূর্ণ খেলা দেখতে। চিয়ার্স লিডার্সদের শরীর দুলিয়ে নৃত্য দেখতে কেউ স্টেডিয়ামে আসে না।
এবিএন/বৃহস্পতি/খেলাধুলা/ডেস্ক/আলিফ