চিটাগং ভাইকিংসের ইনিংস শুরু হতেই গ্যালারি প্রায়পূর্ণ হয়ে উঠে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রায় ২০ হাজার সমর্থক চিটাগং ভাইকিংসকে সমর্থন যুগিয়ে গেছেন পুরো সময়টা জুড়ে।তবে সেই সমর্থন বৃথাই গেছে। ঘরের মাঠে সমর্থকদের এমন হর্ষধ্বনিতেও হারের বৃত্ত ভাঙতে পারেনি তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংস। অথচ দর্শকদের আতিথেয়তা না পেয়েও ম্যাচের পুরোটা সময়েই আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে ঢাকা ডায়নামাইটস।
বৃহস্পতিবার সাগরিকা স্টেডিয়ামে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল ঢাকার কাছে ১৩ রানে পরাজিত হয়েছে চিটাগং ভাইকিংস। অথচ কত সহজেই না ম্যাচটি জিততে পারতো চট্টগ্রাম! ব্যাটসম্যানদের আত্মাহুতিতে চট্টগ্রামে বিপিএল-এর প্রথম ম্যাচটিতে হার দেখতে হয়েছে চট্টগ্রামের সমর্থকদের।
শামীম নামে এক সমর্থক হতাশা ব্যক্ত করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘ভেবেছিলাম এই ম্যাচে জয়ে ফিরতে পারবো। কিন্তু এভাবে ব্যাটিং করে আর যাই হোক ম্যাচ জেতা সম্ভব নয়। সত্যিই হতাশ আমরা।’
গত কয়েক ম্যাচ ধরেই তামিম ইকবাল সংবাদ সম্মেলনে এসে হারের বৃত্তান্ত জানাচ্ছেন। তার মতে কোথায় সমস্যা, চিটগাং ভাইকিংস সেটাই খুঁজে পাচ্ছে না। যদিও ঢাকার শেষ ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন চিটাগংয়ের এই অধিনায়ক।
ব্যাটসম্যানদের ইতিবাচক ক্রিকেট খেলার পারমর্শ দিয়ে ব্যর্থ হচ্ছেন তামিম। ব্যাটসম্যানরাও নিজেদের ভুল শুধরে ইতিবাচক হতে পারেননি বলেই হারের বৃত্তে আটকে আছে কাগজে-কলমে শক্তিশালী দল গড়া চিটাগং। এই ম্যাচ নিয়ে টানা চারটি ম্যাচ হারলো চিটাগং ভাইকিংস।
তামিম ইকবাল শুরুটা টস জয় দিয়েই করেছিলেন। এমন ব্যাটিং উইকেটে হয়তো শুরুর সুবিধা কাজে লাগাতেই বোলারদের হাতে বল তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও তামিমের সেই আস্থার প্রতিদানটা দিতে পারেননি বোলাররা।
শুরুতেই ঢাকা ডায়নামাইটসের ওপেনার মেহেদী মারুফ দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। ২০ বলে ৬ চার ও এক ছয়ে তিনি তার ৩৩ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। আর তাতেই ভালো শুরু পেয়ে যায় অতিথিরা। মিডলে সাঙ্গাকারা-নাসির-মোসাদ্দেকের দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত ঢাকা ১৪৮ রানের সংগ্রহ দাঁড় করাতে সক্ষম হয়। মাঝে চিটাগংয়ের বোলাররা কিছুটা চেপে ধরাতেই ১৫০ এর নিচে আটকে থাকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দলটি।
এমন ব্যাটিং উইকেটে ১৪৯ রান; খুব সহজ সমীকরণ। কিন্তু সহজ এই সমীকরণই টপকাতে গিয়ে শুরুতেই খেই হারিয়ে ফেলে চিটাগং ভাইকিংস। তামিম-জহিরুলের ভুল বোঝাবুঝিতে শুরুতেই ওপেনার জহিরুল ইসলাম অমি রান আউটের শিকার হন। সেই থেকে শুরু ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়া। মাঝে অবশ্য তামিম-এনামুল দুইজন মিলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। মূলত ঢাকার পেসার মোহাম্মদ শহীদের বোলিংয়ে আগুন দেখে চট্টগ্রামের ব্যাটসম্যানরা। চিটাগংয়ের ব্যাটসম্যান নবী-ইলিয়ট-মিলনকে শিকার করে খাদের কিনাড়ায় ঠেলে দেন শহীদ।
ঘরের ছেলে তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ২৬ রানের ইনিংস। তাই চিটাগংয়ের ব্যাটসম্যানরা ঠিক কেমন ব্যাটিং করেছেন সেটা অনেকটাই স্পষ্ট। সবমিলিয়ে তাই শেষ বল খেলেও ঢাকার কাছে ১৯ রানে হার মানতে হয়েছে স্বাগতিকদের।
এই হারে টুর্নামেন্টে টিকে থাকার সম্ভাবনা অনেকটাই ফিঁকে হয়ে গেলো চিটাগং ভাইকিংসের। বাকি ৭ ম্যাচের অন্তত ৬টি জয়ের পাশাপাশি প্রতিপক্ষের হার-জিতের উপর অনেকাংশে নির্ভর করছে চিটাগং ভাইকিংসের সেরা চারে খেলা। আর সববিভাগে আধিপত্য দেখানো ঢাকার জন্য সেরা চার অনেকটাই নিশ্চিত বলা চলে