ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাসসুজ্জামান দুদু সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে সংলাপের কোনো বিকল্প নাই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবের ভিত্তিতে আলোচনা শুরু করুন। তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করা কোনো গণতান্ত্রিক চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ নয়। হয় বেগম জিয়ার প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংলাপ শুরু করুন অথবা নিজেরা একটি প্রস্তাব দিয়ে আলোচনার দ্বার উম্মোচন করুন। মনে রাখবেন সংলাপ ছাড়া কোনো সমস্যার সমাধান হবে না।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানাস্থ বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন। জাতীয় স্মরণ মঞ্চ এই সভার আয়োজন করে।
দুদু বলেন, আমাদের জাতীয় রাজনীতির অহঙ্কার মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ে কঠোর সংগ্রামের মধ্য দিয়েই অতিক্রম করেছেন সারাটা জীবন। তিনি যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন তা আজো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
তিনি বলেন, ৪৭ পূর্বে ব্রিটিশবিরোধী আযাদি আন্দোলন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা, ৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, ৭১ মহান মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলন, ভারতীয় পানি আগ্রাসনের বিরোধী লংমার্চে নেতৃত্ব দিয়েছেন মওলানা ভাসানী। আমৃত্যু তিনি সাম্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াই আর সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অবতীর্ণ ছিলেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক প্রকৌশলী আ হ ম মনিরুজ্জামান দেওয়ান মানিকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জাকির হোসেনের সঞ্চালায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, কল্যাণ পার্টি মহাসচিব এমএম আমিনুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, গণ সংস্কৃতি দল সভাপতি এস আল মামুন, সাংবাদিক শহীদুল্লাহ প্রিন্স, সাখাওয়াৎ ইবনে মঈন চৌধুরী, সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রাকিবুল ইসলাম রিপন, মীর হোসেন মিরন, মেনন চৌধুরী, শেখ মিজান মাসুম প্রমুখ।
নাজমুল হক নান্নু বলেন, মওলানা ভাসানী রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাননি বটে, তবে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তনের অনুঘটক ছিলেন। আজ মওলানা ভাসানীকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু, ষড়যন্ত্রকারীরা জানে না, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন মওলানা ভাসানী দেশপ্রেমিক মানুষের হৃদয়ে থাকবেন।
হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, স্বাধীনতা-মুক্তির জন্য দেশবাসীকে জাগিয়েছেন যিনি, মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন যিনি আর সাম্প্রদায়িক শক্তির বিপক্ষে আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন যিনি-তিনিই ভাসানী।
এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, মজলুম জননেতার আপোষহীন রাজনীতি ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলো অত্যাচারী শাসকশ্রেণির, স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও সাহসী করে তুলেছিলো সাধারণ মানুষকে। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সকল মানুষকেই অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ করার সংগ্রাম করেছেন আজীবন তিনি।
এম এম আমিনুর রহমান বলেন, রাজনীতি আর সংগ্রামের মাধ্যমে একটি জাতিকে জাগিয়ে তোলেন যিনি, তিনিই ভাসানী। ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে এক প্রবলপ্রাণ বিদ্রোহীর নাম মওলানা ভাসানী। মানবতার তূর্যবাদক এক সেনানির নাম ভাসানী।
সভাপতির বক্তব্যে মনিরুজ্জামান দেওয়ান মানিক বলেন, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদের মানবতাবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে রাজনীতির মধ্যদিয়ে বিদ্রোহের পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছেন মওলানা ভাসানী। সাম্রাজ্যবাদী ও লুটেরা শক্তি অত্যাচারী স্তব্ধ না হওয়া অবধি তার সংগ্রাম চলবে।