ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাজীপুর সংবাদদাতা গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ৪ মাসের এক শিশু কন্যাকে হত্যা করে লাশ ডোবায় লুকিয়ে রাখে তার মা। এঘটনায় পুলিশ ওই শিশুর পাষন্ড মা’কে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতের নাম মর্জিনা আক্তার (২২)। সে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার পানখাউয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী এবং একই জেলার চৌহালী থানার কুড়কি গ্রামের মোকাদ্দেস মোল্লার মেয়ে।
কালিয়াকৈর থানার ওসি আব্দুল মোতালেব এবং স্থানীয়রা জানান, প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে প্রায় দেড় বছর আগে সাইফুল ইসলাম ও মর্জিনা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর এ নবদম্পতি কালিয়াকৈর উপজেলার মাটিকাটা ছাপড়া মসজিদ এলাকায় ইব্রাহিম মিয়ার কলোনীতে ভাড়ায় থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকুরী করতো। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই তাদের সংসারে সায়মার জন্ম হয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে সন্তান জন্ম হওয়ার ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা মর্জিনাকে সন্দেহ করে এবং তাকে নিয়ে নানা মন্তব্য করতে থাকে। বিষয়টি তার স্বামী সাইফুল ইসলামকে জানালেও সেও একই ধরণের মন্তব্য করে। একপর্যায়ে এঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মর্জিনা সোমবার গভীর রাতে ৪ মাসের শিশু কন্যাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ বাড়ীর পাশের ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে সায়মা নিখোঁজ হয়েছে বলে প্রচার চালায়। বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজির পর এলাকাবাসি ডোবায় সায়মার লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ মঙ্গলবার শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ প্রথমে নিহতের মা, বাবা ও দাদীকে আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সায়মাকে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে শিশুটির মা মর্জিনা আক্তার। এঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে।
গাজীপুরে পড়শির লাঠির আঘাতে এক শ্রমিকের মৃত্যু ॥
গাজীপুর সংবাদদাতা, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তুচ্ছ ঘটনার জেরে পড়শির লাঠির আঘাতে আহত এক পোশাক শ্রমিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে। নিহতের নাম শুকুর মিয়া ওরফে শুক্কু (৪৫)। তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার শাহপাড়া খলশি এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে এবং কালিয়াকৈরের ফারইস্ট নিটিং কারখানার লোডার ছিলেন। এদিকে সাইফুল খুনের ঘটনায় মূল আসামীকে দেড় বছর পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কালিয়াকৈর থানার এসআই মিজানুর রহমান জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার মাটিকাটা এলাকার আমিরুল ইসলাম সিকদারের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন শুকুর মিয়া। চাকরির পাশাপাশি তিনি ভাড়াবাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় লাউয়ের চাষ করতেন। তিনি জাল দিয়ে লাউক্ষেত ঘিরে বেড়া দেন। রবিবার জালের ওই বেড়া ছেঁড়া দেখে শুকুর গালাগাল করেন। এ সময় একই বাড়ির ভাড়াটিয়া উজ্জ্বল প্রতিবাদ করলে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। দু’জনের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে উজ্জ্বল লাঠি দিয়ে শুকুরের মাথায় আঘাত করেন। এতে গুরুতর আহত হয় শুকুর। স্থানীয়রা তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মধ্যরাতে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এঘটনায় পুলিশ উজ্জ্বলকে (২৮) গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত উজ্জ্বল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার মালঞ্চ এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে।
এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুর সুরাবাড়ী এলাকায় মো. সাইফুল ইসলাম (২৫) খুনের মূল আসামীকে প্রায় দেড় বছর পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার গাজীপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
পুলিশ সুপার জানান, গত বছরের ২৮ জুনে কাশিমপুরের সুরাবাড়ী গ্রামের নাভানা হাউজিং কোম্পানী এলাকার বিল থেকে হাত-পা বাঁধা পানিতে ভাসমান অবস্থায় সাইফুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সাইফুল লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর থানার চর আবাবিল গ্রামের মোঃ আব্দুল খালেকের ছেলে। বর্তমানে তারা ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানার চুলকাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। এঘটনায় নিহতের ভাই মোঃ রুবেল বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত থাকায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কালাকুর গ্রামের অলিউল্লাহ বেপারীর ছেলে মো. মনির হোসেনকে (২১) গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত মনির পুলিশকে জানায়, মনির তার দুই বন্ধুসহ পূর্ব শত্রুতার জেরে সাইফুলকে কেরানীগঞ্জ থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকায় এনে ফুসলিয়ে বিলে বেড়াতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে হাত-পা বেঁধে পানিতে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় মনির।