ক্রাইমবার্তা রিপোট:সিলেটের শহরতলীতে গৃহকর্মী নাজমা বেগম হত্যা মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত তাদের প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আকবর হোসেন মৃধা এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সিলেট সদর উপজেলার পলিয়া গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক আখলাছ মিয়া (৩০) ও একই উপজেলার দেওয়ানেরচক গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক সোরমান আলী (২২)। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, সিলেট শহরতলীর চকগ্রামের আরব আলীর ছেলে আব্দুস ছালামের বাড়িতে আখলাছ ও সোরমান কাজ করতো। কাজের সময়ে আব্দুস ছালামের গৃহকর্মী নাজমা বেগমের (১৮) সঙ্গে সোরমান আলী প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাত ৯ টার দিকে আখলাছ ও সোরমান বিয়ের কথা বলে আব্দুস ছালামের বাড়ি থেকে নাজমাকে ডেকে নিয়ে ছড়াগাং চা বাগানে নিয়ে যায়। এ সময় আখলাছ ও সোরমান মিলে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় তারা ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে নাজমার ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে হত্যা করে ফেলে যায়। পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় আব্দুস ছালাম বাদি হয়ে আখলাছ ও সোরমানকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারকৃত আখলাছ ও সোরমানকে সিলেটের আদালতে গৃহকর্মী নাজমা হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে ২০০০ সালের ১ মে তৎকালিন কোতোয়ালি থানার এসআই জাকের হোসাইন মাহমুদ আসামি আখলাছ মিয়া ও সোরমানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০০০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে আদালত এ মামলার বিচারকাজ শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানি ও ১১ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে (২৪ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার আদালত আসামি আখলাছ ও সোরমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।