ক্রাইমবার্তা রিপোট:আওয়ামী লীগকে পুরনো এবং পরীক্ষিত স্বৈরাচার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তারা নব্য স্বৈরচার নয়। পুরনো স্বৈরাচার। আওয়ামী লীগ কতটা দানব হতে পারে তা তাদের ৭২-৭৫ সালের শাসনামলের দিকে তাকালেই বুঝা যায়।
আজ রোববার দুপুরে সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে মির্জা ফখরুল প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ২৬ তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস্য অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
সংগঠনের সভাপতি ডা. মাজহারুল ইসলাম দোলনের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, অ্যাডভোকেট রফিক সিকদার, খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সারা বিশ্বে ভূপ্রাকৃতিক এবং ভূরাজনৈতিকভাবে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আজকে স্বৈরাচার একনায়কতন্ত্র আবারো মাথাচড়া দিয়ে উপড়ে উঠছে। চোখের সামনে লিবিয়ার গণতন্ত্রকামী মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। ইরাকের সভ্যতাকে ধ্বংস করা হয়েছে। সিরিয়াতে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ ভয়ে ভেলায় করে সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছে। আজকে মানবতা পড়ে থাকছে সমুদ্রের তটভূমিতে।
তিনি বলেন, আজকে আমাদের দেশে ১৯৯০ থেকে ২০১৬ সাল অনেক ব্যবধান। এই সময়ের মধ্যে বহু পরিবর্তন এসেছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়ে গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিয়েছেন শহীদ মিলন। শহীদ আসাদ। তারও আগে প্রাণ দিয়েছেন সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত। কিন্তু তাদের সেই চেতনাকে আমরা ধরে রাখতে পারিনি। আজকে স্বৈরাচার আবারো মাথাচাড়া দিচ্ছে।
ইসি পুনর্গঠন নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রস্তাব নিয়ে সরকারকে আবারো সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের জনগণের মনের ভাষা বুঝে অবিলম্বে সংলাপে বসুন। আর জ্বালাও পোড়াও করবেননা। কালক্ষেপণ করবেননা। অবিলম্বে সংলাপে বসে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ তৈরি করুন। আসুন অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনার পথ বের করি। সময় শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই আলোচনা করি। আমরাতো আমাদের প্রস্তাব মানতে বলিনি। বলেছি- সব রাজনৈতিকদলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান বের করতে।
কিউবার সদ্য প্রয়াত নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ট্রো শহীদ জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তিনি সারা জীবন অন্যায় এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। তাকে আদালতে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জনগণের মন থেকে তাকে মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি। ইতিহাস তাকে ধারণ করেছে। তেমনি শহীদ জিয়ার নাম মুছে ফেলা যাবেনা।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আমাদের পরীক্ষার সময় । শুধু নিজেদেরকে নয়, সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এই দানব সরকারকে সরাতে হবে। না হলে জাতি ধ্বংস হয়ে যাবে । একটি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই এই দানব সরকারকে আমরা সরাবো।