ক্রাইমবার্তা ডেস্ক রিপোট: শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সুচি রাখাইনে মুসলমানদের সমস্যা সমাধানে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। শান্তিতে সবচেয়ে বড় পুরস্কার বিজয়ী নেতা নিজ দেশেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। অং সান সুচি এখনও তার দেশের একজন প্রকৃত নেতা। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণও তার হাতে। যদিও সুচি জাতিসংঘের চাপে কিছুটা নত হয়েছেন।
আর তিনি যদি রাখাইনদের সম্পর্কে কোনো নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য তদন্ত করতে চান তাহলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার একটা সমস্যা তৈরি হবে এবং সেই সঙ্গে বিপদে পড়ে যাবে সুচির সরকার।
ইন্ডিপেন্ড নিউজ এজেন্সি জানায়, রাখাইনদের ব্যাপারে গত সপ্তাহে অং সান সুচি সম্পূর্ণ নীরব ছিলেন। এর আগে তিনি বলেছিলেন, রাখাইনে যারাই বসবাস করবে তাদের ‘রোল অফ ল’ মেনে থাকতে হবে।
এ নিয়ে জাতিসংঘ আওয়াজ তোললেও এটা দিয়ে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের প্রতি হামর্“ী না দেখানোটা প্রায় একই রকম। এমন আচরণটা যেন রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমার আর্মিদের বর্বরতাকে প্রত্যক্ষ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ, মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ট জনসাধারণ বৌদ্ধধর্মের অনুসারী। এক জরিপে জানা যায়, মিয়ানমারে দশ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানের বসবাস। সেসব মুসলমানদের ব্যাপারে বলা হয়ে থাকে, তারা মূলত বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী। সরকার তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করেছে। অথচ রোহিঙ্গা মুসলমানরা মিয়ানমারে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বসবাস করে আসছে।
রাখাইন রাজ্যে ২০১২ সালে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হলে সবচেয়ে বড় সংখ্যা রোহিঙ্গা মুসলিমরা আজও শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তারা সেখানে প্রতিনিয়ত চরম বৈষম্য, ব্যাপক অবিচার এবং বেশ বাড়াবাড়ির মুখোমুখি হচ্ছে। কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান কাগজপত্র ছাড়াই বাংলাদেশে বসবাস করে আসছে। যারা কয়েক দশক আগে মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে এসেছিল।
মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকার মংডুতে ৯ পুলিশ কর্মকর্তা মারা যাওয়ার পর গত মাসে রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের ব্যাপক অভিযান শুরু করেছিল। রোহিঙ্গা একটিভিস্টরা বলেছে, এ অভিযানে ১০০ এর বেশি লোক মারা গেছে এবং শত শত মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর মানবতার বিরুদ্ধে চরম অন্যায়ের অভিযোগ করা হয়েছে। যার মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত হিংস্রতা, ধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগও রয়েছে। মিয়ানমার সরকার এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। আর এদিকে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের দেশ ছাড়া করতে তাদের ওপর হেলিকপ্টার দিয়ে হামলা করে যাচ্ছে।
সূত্র: দৈনিক পাকিস্তান উর্দু