স্টাফ রিপোর্টার : ‘ডাকাত হাতে-নাতে পেলে পিষে মেরে ফেলুন’-জনসমাবেশে এ বক্তব্য দেয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) টি এম মোজাহিদুল ইসলামকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৪ ডিসেম্বর তাকে আদালতে হাজির হয়ে এ বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এ বক্তব্যের বিষয়ে পুলিশের আইজি ও এসপিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গতকাল রোববার বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি মোহম্মদ উল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আইনজীবী আশরাফ-উজ্জামান পত্রিকার প্রতিবেদন আদালতের নজরের আনেন।
আদালত আদেশ দেয়ার সময় বলেন, দেশটা কি মগের মুল্লুক? একজন সরকারি কর্মকর্তা কীভাবে আইন বহির্ভূতভাবে এ ধরণের বক্তব্য দেন? এটা মেনে নেয়া যায় না। রুলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সংবিধান বহির্ভূতভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নেয়াসহ ওই এলাকার জনগণকে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া, তথা সেই অঞ্চলের জনগণকে আইন স্বহস্তে নিয়ে বিচারবহির্ভূতভাবে অপরাধীকে মৃত্যু প্রদানে উসকানি দেয়ায় কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আগামী সাতদিনের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, পুলিশের আইজি, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও এসপিকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ চক্ষু হাসপাতাল চত্বরে গত ২৫ নবেম্বর চক্ষুশিবিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন এসপি টি এম মোজাহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য আবদুল ওদুদ। এসপি তার বক্তব্যে বলেন, ‘ডাকাত যদি হাতেনাতে পান, তো জলজ্যান্ত ওটাকে পিষে মেরে ফেলেন। একটা মার্ডার কেস নেব, এটা সত্য কথা এবং এক মাসের মধ্যে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে চলে আসব। গ্যারান্টি আমার। আমি যদি গ্যারান্টার হই, তবে আপনাদের কোনো ভয় আছে? যদি ডাকাত হাতেনাতে ধরতে পারেন, এলাকার লোকজনকে মাইকে ডেকে এনে ওকে পিষে মেরে ফেলেন। মাদকের গাড়ি হলে সেটি আগুনে পুড়িয়ে দেবেন। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, আপনাদের নামে কোনো মামলা হবে না। এই গ্যারান্টি আমার।’