ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুল আইএস জঙ্গিদের দখলমুক্ত করার লক্ষ্যে দেশটির সরকারের অভিযান শুরু করার প্রেক্ষাপটে নিহতের সংখ্যা বেড়েছে। নভেম্বরে ৯২৬ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এসময় ৯৩০ জন আহত হয়েছেন।
ইরাকে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি জন কুবিস বলেন, হতাহতের এ সংখ্যা ‘বিস্ময়কর’। তিনি বলেন, ইরাকি বাহিনী জানিয়েছে, মসুল পুনরুদ্ধারে ছয় সপ্তাহ ধরে চালানো অভিযানে বেসামরিক মানুষ হতাহত হওয়ার ঘটনা এড়াতে তারা সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।
গত মাসে বাগদাদ প্রদেশে ধারাবাহিক বোমা হামলায় ১৫২ জন সাধারণ মানুষ নিহত ও ৫৮১ জন আহত হয়েছেন। আর মসুল যে প্রদেশে অবস্থিত সেই নাইনভে প্রদেশে নিহত হয়েছেন ৩৩২ জন সাধারণ মানুষ, আহত হয়েছেন ১১৪ জন। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অঞ্চল কিংবা বিভাগভিত্তিক হতাহতের পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি। ওই বাহিনীতে সেনা, পুলিশ, কুর্দি পেশমার্গা যোদ্ধা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা মিলিতভাবে অংশ নিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক কমিটি ফর দ্য রেডক্রস (আইসিআরসি) হুশিয়ার করে দিয়েছে, মসুল পুনরুদ্ধারে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। শহরটির আইএস নিয়ন্ত্রিত অংশে ১৫ লাখ সাধারণ মানুষ বসবাস করছেন যারা ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে প্রায় ৭৭ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাদের অনেকে সরকারের পরামর্শে নিজেদের বাড়িতেই অবস্থান করছেন।
১৬০০ কুর্দি যোদ্ধা নিহত : এদিকে ইরাকের কুর্দি পেশমার্গা বাহিনী জানিয়েছে, ২০১৪ সালের জুন মাসে দেশটিতে আইএসের উত্থান হওয়ার পর থেকে লড়াইয়ে ১৬০০ কুর্দি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। পেশমার্গা মন্ত্রণালয়ের মহাসচিব জবর ইয়াওয়ার এএফপিকে জানান, আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হওয়ার পর গত আড়াই বছরে ১ হাজার ৬১৪ কুর্দি যোদ্ধা নিহত এবং ৯ হাজার ৫১৫ জন আহত হয়েছে।
‘ভুল’ হামলায় নিহত ৫৪ : যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট জানিয়েছে যে ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে বোমা হামলা চালানোর সময় গত মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ভুলবশত হামলায় ৫৪ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। ২০১৪ সালের শেষের দিকে আইএসবিরোধী লড়াই শুরু হওয়ার পর কথিত ভুল হামলায় ১৭৩ জন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে এ জোট। তবে সমালোচকরা বলছেন, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।