ক্রাইমবার্তা রিপোট:মোঃ আলাউদ্দীন,হাটহাজারী(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
হাটহাজারীর এগার মাইল বনবিট ও বনজ দ্রব্য পরিক্ষণ ফাঁড়ি দিয়ে অবৈধভাবে গাছ ও বাঁশ পাচার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম সূর্যাস্তের পর বনজ দ্রব্য পরিবহন নিষিদ্ধ। কিন্তুু নিত্যদিন এগার মাইল বনবিট ও বনজ দ্রব্য পরিক্ষণ ফাঁড়ি দিয়ে সূর্যাস্তের পর প্রায় ভোররাত পর্যন্তই নিয়মবর্হিভ’ত ভাবে পাচার হচ্ছে এসব গাছ ও বাঁশ । এ উপজেলায় পরিবেশ আইন লংগন করে পাহাড়ী বনাঞ্চল নিধনের মহোৎসবও চলছে। ইট পোড়ানের এ মৌসুমে এক শ্রেণীর স্বার্থান্মেষী মহল এ কাজ করছে। এতে করে এলাকার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে হুমকির সম্মূখীন হয়ে পড়ছে। পরিবেশ বান্ধব প্রাণীও বিলুপ্ত হতে চলেছে।
গোপন সূত্রে জানা যায়,এ ফাঁড়িকে প্রতি ট্রাক ১৫শত থেকে ২ হাজার,প্রতি জীপ,মিনি ট্রাক,কার্ভাডভ্যান,টমটম,বাস,ভ্যান গাড়িকে ৫শত থেকে ১ হাজার টাকা হারে চাঁদা দিতে হয়। প্রতিদিন এই ফাঁড়ি দিয়ে ২০-৫০টিরও বেশি কাঠ বোঝাইকৃত ট্রাক চলাচল করে। সেই হিসেবে দিনে আয় দাঁড়ায় প্রায় লক্ষ টাকার কাছাকাছি।
জানা যায়, হাটহাজারী রেঞ্জের আওতায় ৫টি বনবিট রয়েছে। তার মধ্যে উপজেলার আওতাধীন ১১ মাইল এলাকায় একটি বনজ দ্রব্য পরিক্ষণ ফাঁড়িও রয়েছে। হাটহাজারী,মন্দাকিনী ,নাজিরহাট, শোভনছড়ি এবং সত্তাবনবিট এ রেঞ্জের আওতায় । এসব বিটের মধ্যে হাটহাজারী পৌরসভার পশ্চিমের পাহাড়,মন্দাকিনীর পশ্চিমে ছোট কাঞ্চনপুর,মাহমুদাবাদ, মোহচেনা পাড়া,উদালিয়াসহ থেকে শুরু করে ফটিকছড়ির,শোভনছড়ি এবং সর্ত্তাবনবিট এলাকায় বিশাল পাহাড়ী বনভ’মি রয়েছে। বনভূমি সমূহের মধ্যে বেশীর ভাগ সরকারি বনাঞ্চল আর কিছু কিছু ব্যক্তি মালিকানায় সৃজিত বনভ’মি রয়েছে। সরকারি বন ভূমির কথা বাদ দিলেও ব্যক্তি মালিকানায় সৃজিত বন ভূমির গাছ কাটতে রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বিট কর্মকর্তার অনুমোতির প্রয়োজন। কিন্তু ইট পোড়ানের মৌসুমে উল্লেখিত রেঞ্জ ও বন বিটের আওতাধীন পাহাড়ী এলাকা থেকে গাছ কাটার মহোৎসব চলছে। প্রতিনিয়ত এসব পাহাড়ী এলাকার গাছ কেটে গভীর রাত থেকে ভোর রাত পর্যস্ত শতাধীক চাঁদের গাড়ি,জীপ,মিনি ট্রাক ও ভটভটি গাড়িতে করে গাছ বিভিন্ন ইট ভাটায় নেওয়া হচ্ছে। যেভাবে বনের কাঠ নিধন করা হচ্ছে এতে পরিবেশ মারাত্মক ভাবে হুমকীর সম্মূখীন হয়ে পড়ছে। ব্যাপক হারে পাহাড়ী এলাকা থেকে গাছ কাঠার কারণে পরিবেশ ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। এতে করে পরিবেশ বান্ধব বন্য প্রাণী ও বিলুপ্ত হতে চলেছে। হাটহাজারী পৌরসভার পশ্চিমে সুজানগর,চারিয়া,পশ্চিম মির্জাপুর,ধলই,ফরহাদাবাদের উদালিয়া,মাহমুদাবাদ,মোহচেনা পাড়া এবং শোভনছড়ি ও নাজিরহাট বনবিট সংলগ্ন এলাকা মিলে মোট ৩৩ টি ইটভাটা রয়েছে। তার মধ্যে অনুমোদন রয়েছে মাত্র ১৪ টির। এসব ইট ভাটায় পাহাড়ী এলাকার গাছ কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে। বন বিভাগের অসাধু লোকজনের সাথে গোপন সমঝোতা করে এক শ্রেণীর স্বার্থান্মেষী মহল কর্তৃক বনাঞ্চল নিধনের খবর মানুষের মুখে মুৃখে। পরিবেশ আইন লংঘন করে নতুন নতুন ইট ভাটা স্থাপন এবং পাহাড়ী এলাকার গাছ কাটার বিষয়ে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বারবার আলোচনা হলেও দায়িত্বশীল প্রশাসনের কোন কার্যকর পদক্ষেপ না দেখে সচেতন মহল হতাশ হয়ে পড়েছে। জরুরী ভিত্তিতে বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ গ্রহন করা না হলে পরিবেশ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং পরিবেশ বান্ধব প্রাণী গুলো বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে পর্যবেক্ষক মহল মত প্রকাশ করেছেন।
১১ মাইল বনবিট পরীক্ষণ ফাঁড়ির কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দীন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। কাঠ বাঁশ বহনকারী যানবাহন থেকে কোনো প্রকার টাকা নেয়া হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে কোনো প্রকার টাকা নেয়া হয়না এবং কাউকে দেয়াও হয়না।
এব্যাপারে রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আরাফাত বলেন, আমি এসিএফ হিসেবে অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছি তাই এ বিষয়ে তেমন অবগত নই।
