ক্রাইমবার্তা রিপোট:রাজশাহী মহানগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলামকে র্যাব সদস্যরা আটক করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর আগে আজ বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে নগরীর শিরোইল কলোনির ২ নম্বর গলির ওয়েল্ডিংয়ের দোকান থেকে কে বা কারা কামরুলকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যান। ওই ঘটনার পর থেকে কামরুলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ।
তবে কামরুল ইসলামকে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় সন্দেহজনক ব্যক্তি হিসেবে র্যাব আটক করেছে বলে দাবি করেছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। তবে র্যাবের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
কামরুলের দোকানের কর্মচারী জয় হোসেন জানান, দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলাম দোকানে বসেছিলেন। এ সময় একটি জলপাই রঙের মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন লোক এসে তাঁকে দোকানের বাইরে বের হতে বলেন। কামরুল ইসলাম দোকানের বাইরে বের হওয়া মাত্র তাঁকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
ওই মাইক্রোবাসটিতে সাতজন লোক ছিল বলে দাবি করেন কর্মচারী জয়। তবে কাউকেই তিনিসহ অন্য লোকজন চিনতে পারেননি। ওই সাতজনের মধ্যে চারজন নিচে নেমে কামরুলকে বাইরে ডেকে নেন। আর মাইক্রোবাসের ভেতরে বসা ছিল আরো তিনজন। তবে কামরুলকে তুলে নেওয়ার পরে তাঁরা সবাই মাইক্রোবাসটিতে উঠে দ্রুত পেছন দিকে ঘুরে ওই স্থান ত্যাগ করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কামরুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। গত ২০ বছর ধরে তিনি রাজশাহী নগরীর শিরোইল কলোনি এলাকায় ভাড়া থাকেন। সেখানেই তিনি ব্যবসা করে সংসার চালান। রেলওয়ের ঠিকাদারদের কাজ এবং বাড়ির দরজা-জানালার কাজ করে থাকেন তিনি।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আল-আমিন হোসাইন বুধবার সন্ধ্যায় জানান, কামরুলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁরা দোকানটি পরিদর্শনে যান। এ সময় দোকানের কর্মচারী ও তাঁর ছেলে ডিবি পুলিশকে জানায়, বেলা আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে কয়েকজন ব্যক্তি কামরুলকে তাঁর দোকান থেকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যান। তবে তারা কারা তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
জানতে চাইলে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন খান জানান, কামরুলকে পরিবারের সদস্যরা মৌখিকভাবে বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন। তবে রাত ৮টা পর্যন্ত থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি কেউ।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের বলেন, ‘কামরুলকে র্যাব আটক করে নিয়ে গেছে। র্যাব তাকে আটকের বিষয়টি আমার কাছে স্বীকার করেছে। আমরা বিষয়টি দেখছি।’
ডাবলু সরকার বলেন, সম্প্রতি জেলা স্টেডিয়ামের সামনে থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। চুরির দৃশ্য সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। চুরির কিছুক্ষণ আগে মোটরসাইকেল চোরদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হ্যান্ডসেক করেছিলেন। এ দৃশ্যও সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। এ কারণে সন্দেহজনকভাবে র্যাব সদস্যরা কামরুলকে ধরে নিয়ে গেছে। একজন নেতার সঙ্গে অনেকেই হাত মেলাতে আসেন। তাই বলে তিনি চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়টি এমনও নয়। তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার কথা।’
তবে কামরুল ইসলামকে আটকের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে র্যাব ৫-এর রেলওয়ে কলোনি ক্যাম্পের অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার কেবিএম মোবাশ্বের রহিম বলেন, ‘আমি অফিসের বাইরে আছি। কামরুলকে আটক করে আনা হয়েছে কী না তা জানি না। অফিসে ফিরলে বলতে পারব।’
তবে র্যাবের অন্য কর্মকর্তারা কামরুলকে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।