ক্রাইমবার্তা রিপোট:ডাক্তার, নার্স, আয়া, নাইট গার্ড সবাই মিলে ১২/১৩ জন দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। এর মধ্যেই চার দুর্বৃত্ত অস্ত্রের মুখে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মায়ের পাশ থেকে ৭ম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করেছে।
মঙ্গলবার বিকালে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ১নং বেডে চিকিৎসাধীন ধর্ষিতা কিশোরীর মা জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় তার কিশোরী মেয়ে বাবার সঙ্গে তাকে দেখতে হাসপাতালে আসে। এরপর মেয়েকে হাসপাতালে রেখে মেয়ের বাবা জালিয়াপালং ইউনিয়নের পূর্ব সোনারপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি চলে যায়।
তিনি বলেন, রাত ১২টার দিকে ওয়ার্ড থেকে বাথরুমে যাওয়ার সময় হাসপাতাল করিডোর থেকে তার মেয়েকে দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায়। পরে নৈশ প্রহরীরা ও স্থানীয় লোকজন হাসপাতালের উত্তর পাশের বাউন্ডারি ওয়াল সংলগ্ন কবরস্থান থেকে রাত ১টার দিকে মেয়েকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করে।
ওই কিশোরীকে উদ্ধারকারীদের মধ্যে থাকা নজরুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক অধিবাসী বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন।
কিশোরীর বাবা এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, একটি সরকারি হাসপাতালে সব কিছু থাকার পরও কি করে দুর্বৃত্তরা এমন ঘটনা ঘটালো। তিনি সংশয় প্রকাশ করে বলেন, আদৌ এর সুষ্ঠু বিচার পাবো কিনা এবং বিচার চাইতেও পারি কিনা জানি না।
উখিয়া হাসপাতালের প্রধান সহকারী ফরিদুল আলম ঘটনার ব্যাপারে বলেন, সোমবার দিনগত রাতে হাসপাতাল এলাকায় সরকারি দুইজন, আইওএম এর দুইজন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সুসাইটির দুইজন ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসের একজন আনসার ও ভিডিপি সদস্যসহ মোট সাতজন নাইট গার্ড কর্মরত ছিল।
তিনি বলেন, এতো নিরাপত্তার পরও কিভাবে দুর্বৃত্তরা হাসপাতাল থেকে রোগীর কিশোরী মেয়েকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করলো এবং ঘটনার সম্পর্কে নাইট গার্ডরা কাউকে কিছু জানালো না তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।
ঘটনার সময় হাসপাতালে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত ডাক্তার আরিফা মেহের রুমী চিকিৎসাধীন মায়ের কাছে থাকা কিশোরীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, তার নিজের নিরাপত্তা নিয়েই খুবই উদ্বিগ্ন থাকায় হাসপাতালের কোয়াটার ছেড়ে কক্সবাজার আসা যাওয়া করতে হচ্ছে।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তা ডাক্তার মিজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্থ কিশোরী পরিবারকে যাবতীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
উখিয়া থানার ওসি মোঃ আবুল খায়ের বলেন, ঘটনার সম্পর্কে জানতে পেরে কয়েক দফা পুলিশি অভিযান চালানো হয়েছে। অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।