হাসপাতালে উপচে পড়া ভিড়, উদ্ধার কাজে সেনা

ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের সুমাত্রা দ্বীপে ভূমিকম্পের পর উদ্ধার কাজে সহযোগিতার জন্য দেশটির সেনা সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। ভূমিকম্পে আহতরা হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছেন। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ভূমিকম্পে হতাহতের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা এখনও জানাতে পারেনি দেশটির সরকার। সর্বশেষ পাওয়া খবরে ৯৭ জন নিহতের কথা বলা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার সংবাদমাধ্যম জাকার্তা পোস্ট এ খবর জানিয়েছে।

দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাবরার ফাদিল্লাহ জানান, উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে সহযোগিতার জন্য বুধবার সকালে ৭৪০ জন সেনা সদস্যকে পিদি এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। আরও অতিরিক্ত ৪০০ সেনা সদস্যকে প্রস্তুত নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় তারা এ কাজে যোগ দেবেন।

স্থানীয় সময় বুধবার ৭ ডিসেম্বের ভোর ৫টা ৩ মিনিটে উত্তর সুমাত্রার বান্দে আচেহর ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ও সিগলি শহরের ১২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ৬.৫ মাত্রার এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল সমুদ্রের নিচে, ভূমি থেকে ১৭.২ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা রয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ভূমিকম্পে চাপা পড়েছেন অনেকেই

ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়াদের উদ্ধারে অভিযান চলছে। এতে সেনাবাহিনীও অংশগ্রহণ করেছে। ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি জানায়, ভূমিকম্পে গভীর আঘাত পাওয়া ৭৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

সিগলি শহরের অনেক আহতদের প্রতিবেশী প্রদেশের রাজধানী পিদিতে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্চে। পিদি জায়াতে হাসপাতালগুলোতে আহতদের ভিড় বেশি থাকায় চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। সিগলিতে মাত্র একটি হাসপালাতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
6
স্থানীয় হাসপাতালের ডাক্তার সুতোপো নুগ্রহো জানান, ‘আমাদের ধারণা, অনেকে এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন, তাই নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতা এখনও চলছে।’

হাসপাতালগুলোতে আহতদের চিকিৎসা চলছে

পিদি জায়া জেলার প্রধান আইয়ুব আব্বাস জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে বেশ কয়েকটি বাড়ি ও দোকান ভেঙে পড়ে। এতে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি ধ্বংসস্তূপ সরাতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং জরুরি ওষুধ ও খাদ্য সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছেন।

অস্থায়ী তাঁবুতেও চলছে আহতদের চিকিৎসা

ভূমিকম্পের তীব্রতায় বান্দে আচেহতে বহুতল ভবন ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুলিশ স্টেশনও। উদ্ধারকাজ চলছে। অনেকের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে তাদের অনেকেই ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়া ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। ২০০৪ সালে ৯.২ মাত্রার প্রলঙ্করী এক ভূমিকম্প ও সুনামিতে ভারত মহাসাগরের উপকূলে থাকা ইন্দোনেশিয়া ও অন্যান্য দেশের অনেক জনপদ ভেসে যায়। তখন কেবল আচেহ প্রদেশেই মারা পড়েছিলেন ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, জাকার্তা পোস্ট।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।