ক্রাইমবার্তা রিপোট:গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আমাদের জাতীয় রাজনীতির অহংকার মওলানা ভাসানী নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ে কঠোর সংগ্রামের মধ্যদিয়েই অতিক্রম করেছেন সারাটা জীবন। তিনি এ জাতির হৃদয়-প্রাণ। কোন সরকার তার জন্য কি করলো তাতে কিছু আসে যায় না। তিনি সরকারী ও বিরোধী রাজনীতিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবেন, স্বাধীনতার কথা বলবেন আর মওলানা ভাসানীর কথা বলবেন না এটা আত্মপ্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জাতীয় প্রেসক্লাবে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ১৩৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় স্মরণ মঞ্চ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখছিলেন।
ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরো বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করা সরকারের দায়িত্ব। এ কাজ করতে না পারলে ইতিহাস আওয়ামী লীগ-বিএনপি আমাদের কাউকেই ক্ষমা করবে না। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও এ তালিকা করা অসম্ভব নয়।
তিনি বলেন, সরকারের নতজানু ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির কারণে আমরা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হচ্ছি। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
বিএনপি চেয়াপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট নজমুল হক নান্নু বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর যে স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখতেন তা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তিনি বলেন, ৪৭ পূর্বে বৃটিশ বিরোধী আজাদী আন্দোলন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা, ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৭১ মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলন, ভারতীয় পানি আগ্রাসনের বিরোধী লংমার্চে কোথায় নেই ভাসানী? তিনি প্রশ্ন করেন, কেন মওলানা ভাসানীর প্রতি এত অবহেলা? ভাসানীকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে, দেশের স্বার্থে-মানুষের স্বার্থে।
মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর আপসহীন রাজনীতি ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল অত্যাচারী শাসকশ্রেণির, স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও সাহসী করে তুলেছিল সাধারণ মানুষকে। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সকল মানুষকেই অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ করার সংগ্রাম করেছেন আজীবন তিনি।
ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, মওলানা ভাসানী আমৃত্যু তিনি সা¤্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াই আর সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অবতীর্ণ ছিলেন। তিনি বলেন, নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, গাইবান্ধায় সাঁওতালদের উপর হামলা সকল কিছুর সাথেই আওয়ামী লীগ জড়িত। আর সরকার প্রকৃত অপরাধিদের আড়াল করতে বিভিন্ন নাটক সাজাচ্ছে।
মঞ্চের আহ্বায়ক এ.এইচ.এম. মনিরুজ্জামান দেওয়ান মানিকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনায় আরো অংশ নেন ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম প্রধান, সাংবাদিক আবদুল আউয়াল ঠাকুর, কল্যাণ পার্টি ভাইস চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান তামান্না, গণসংস্কৃতি দলের সভাপতি এস.আল-মামুন, মুক্তিযোদ্ধা আমিরুজ্জামান, কবি মাহমুদুল হাসান নিজামী, সংগঠনের সদস্য মিজান মাসুম, মো: বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।