ক্রাইমবার্তা রিপোট:ইবি প্রতিনিধি-ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয় দিবসের খাবার নিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় উভয় গ্রুপের ৮ জন আহত হয়েছে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের পর কুষ্টিয়া প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রত্যেক আবাসিক হলে উন্নত মানের খাবার সরবরাহ করে স্ব স্ব হল প্রশাসন। শিক্ষার্থীরা হল প্রশাসন থেকে ৩০ টাকার বিনিময়ে টোকেন সংগ্রহ করে। শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা টোকেন দিয়ে ডাইনিং থেকে খাবার সংগ্রহ করছিল। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলামের অনুগত ও সাদ্দাম হোসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান নাঈম ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খাঁন সাগরসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী খাবার পরিবেশনস্থলে উপস্থিত ছিল। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার দাসের কর্মী ও সাদ্দাম হোসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নওশাদ কবীর খাবার নিতে যায়। সাইফুল গ্রুপ কর্মীদের অভিযোগ নওশাদ টোকেন ছাড়াই বাহিরাগতদের নিয়ে খাবার দাবি করে। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। তখন নওশাদ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হল প্রভোস্টসহ আবাসিক শিক্ষকরা তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করে। নওশাদ তাদেও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।
পরে হলের বাইরে থাকা সুমন, সজয়, তৌকীসহ ২০/২২ জন ছাত্রলীগ কর্মী নিয়ে নওশাদ তাদের উপর হামলা চালায়। তখন উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা শুরু হয়। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপ রড, লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে। এসময় হলের খাবার নিতে আসা সাধারণ শিক্ষার্থীরাও তাদের হামলার শিকার হয়ে ছুটাছুটি করতে থাকে। হলে আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের ৮/১০ জন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছে। সভাপতি গ্রুপের জসিম, নীল হৃদয়, মিজানসহ কয়েকজন গুরুত্বর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। গুরুতর আহত জসিমকে কুষ্টিয়া পাঠানো হয়েছে।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
নওশাদ কবীর বলেন, আমিসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী টোকেন দিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে ডাইনিংয়ে প্রবেশ করি। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি গ্রুপের কর্মী ও সাদ্দাম হোসেন হলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খাঁন সাগর আমার উপর খারাপ ব্যবহার করে। আমি খাবার নিয়ে বাইরে বের হলে তারা আমার উপর হামলা চালায়।
সাদ্দাম হোসেন হলের সভাপতি মেহেদী হাসান নাঈম বলেন,‘আমরা প্রভোস্টের অনুরোধক্রমে হলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খাঁন সাগরসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী খাবার পরিবেশনে সহযোগিতা করছিলাম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার দাসের কর্মী নওশদ টোকেন ছাড়াই খাবার দাবি করে। তখন কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। পরে তারা ২০/২২ বহিরাগত ছাত্রলীগকর্মী নিয়ে আমাদের উপর আতর্কিত হামলা চালায়।
সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. আশরাফুল আলম বলেন,‘ছাত্রলীগের দু‘গ্রুপের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির ফলে সমস্যা হয়েছিল। পরে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে।’
প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন,‘ঘটনা শুনেই আমিসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি। বিজয় দিবসের দিনে যারা এধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করব।