ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাজীপুর সংবাদদাতা, গাজীপুরে নিখোঁজের আটদিন পর শুক্রবার সেপটিক ট্যাংক থেকে এক স্কুলছাত্রের অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম আতিকুর রহমানের (১৪)। সে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বিপ্রবর্থা এলাকার আব্দুল রশীদের ছেলে।
জয়দেবপুর থানার এআই মোঃ রাজিব শেখ জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাউলতিয়ার কারখানা বাজারের দক্ষিণ পাশে একটি মৎস খামার সংলগ্ন সিরাজুল ইসলামের বাংলো বাড়ির গৃহকর্মী শুক্রবার সকালে বাড়িতে পরিচ্ছন্নতা কাজ করার সময় তীব্র দুর্গন্ধ পান। পরে বিষয়টি স্থানীয়দের জানালে তারা দুর্গন্ধস্থল সেফটি ট্যাংকির ঢাকনা খুলে একটি মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই সেফটি ট্রাংকি থেকে এক কিশোরের মরদেহটি উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। স্থানীয়রা মরদেহটি নিখোঁজ স্কুল ছাত্র আতিকুরের বলে সনাক্ত করেন। মরদেহটি কয়েকদিন আগে ওই সেফটি ট্যাংকিতে ফেলে রাখার কারণে লাশটি ফুলে গেছে এবং সেটিতে পোকা ধরে গেছে।
তিনি আরো জানান, স্থানীয় বিপ্রবর্থা এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে আতিকুর রহমান (১৫) এবার কাউলতিয়া জহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা শেষে দরিদ্র পরিবারের সন্তান কারখানা বাজার এলাকার ‘দেওয়ান ব্রিকস’ ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ নেয়। গত শুক্রবার রাতে আতিক ওই ইটভাটায় কাজে গিয়ে আর ফেরেনি। এ ঘটনায় পুলিশ সোমবার ইট পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকের চালক আব্দুল আলিম, শ্রমিক মো. শফিকুল ইসলাম ও খোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করে।
গাজীপুর আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইলিয়াস রহমানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তারা আদালতকে জানায় গত ৯ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ঢাকায় ইট নামানোর সময় ইটের সঙ্গে আতিক মাটিতে পড়ে যায়। এরপর শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়ায় সে মারা গেছে বলে ধারণা করে বিষয়টি ইটভাটার মালিক ইমরান দেওয়ানকে জানানো হয়। এসময় ইটভাটার মালিক নিহত আতিকের লাশ বস্তায় ভরে ইটভাটায় নিয়ে যেতে বলেন। মালিকের কথামতো তারা আতিকের মরদেহ বস্তায় ভরে ট্রাকসহ ইটভাটায় নিয়ে যায়। পরে ইটভাটার মালিক লাশ রেখে সেখান থেকে তাদের চলে যেতে বলেন। পরে আতিকের মরদেহ কী করা হয়েছে তা তারা জানেন না।
এদিকে আটকদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী বুধবার ওই ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে আতিকের সন্ধান পায়নি পুলিশ। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইটভাটার মালিক ইমরান ও ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম সেখান থেকে পালিয়ে যায়। অবশেষে ছেলের হদিস না পেয়ে আতিকের বাবা গত বুধবার রাতে জয়দেবপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় দেওয়ান ব্রিকসের মালিক বিপ্রবর্থা গ্রামের মো. হেলাল দেওয়ানের ছেলে মো. ইমরান দেওয়ান (৩৫), আব্দুর বারেকের ছেলে ট্রাক চালক আব্দুল আলিম (২৮), শাহজাহানের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (২২), মারফত আলীর ছেলে মো. শাহিন (২৫) ও মীরেরগাঁও এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে খোরশেদ আলমকে (২২) আসামি করা হয়েছে।
Check Also
আশাশুনির প্রতাপনগরে ৫ আগস্ট বন্দুকের গুলিতে নিহত ৩ শহীদের অভিভাবকদের সংবাদ সম্মেলন
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।। গত ৫ আগষ্ট-২০২৪ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান …