ক্রাইমবার্তা রিপোট: ব্যূরোপ্রধান : কৃষি জমিতে ইট তৈরী ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ উপেক্ষা করে চলছে অবৈধ ইট ভাটা । লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার নতুন তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের আধাঁর মানিক ৭ নং ওয়ার্ডে দূর্গম চর এলাকায় ব্যবহিত হচ্ছে পরিবেশের ক্ষতিকারক ড্রাম চিমনী। সরকারী স্কুল, কৃষি জমি, জনবসতি ও বনায়ন এলাকার সন্নিকটে এ ইট ভাটার কার্যক্রম চালিয়ে আসছে ৪ বছর ধরে । ইতি পূর্বে এ ইটভাটায় ব্যবসায়ী মালিকদের কার্যক্রম সরকার জনস্বার্থে বন্ধ করে দিলেও স্থায়ী ভাবে অবৈধ ইট ভাটা গুলো বন্ধ করা যায়নি। ফলে চলতি বছর আবারো ইট ভাটা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ইট ভাটার মালিকগণ। ইট ভাটা পরিচালনার কোনো নিয়মনীতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করে জ¦ালানি হিসাবে ব্যবহিত হচ্ছে কাঠ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , নতুন তেওয়ারীগঞ্জ ৭ নং ওয়ার্ডের আর বি এম মালিক জবি উল্লা পাটোওয়ারী, মুদিখানা পোল সংলগ্ন ,চরমটুয়া ফরাশগঞ্জ বি .এম ব্রিকস্ এর মালিক মিজানুর রহমান ,মোফাচ্ছের হোসেন মাসুম, খোরশেদ এন্ড হুমায়ুন ব্রিকস্ সহ কৃষি জমিতে বিগত ৪ বছরের ন্যায় আবারো কাঁচা চিমনী হিসেবে পরিচিত কাটা ড্রাম চুল্লি দিয়ে তৈরী ইট ভাটার বনের মূল্যবান গাছ পালা কেটে কাঠ পুড়ানো হচ্ছে। এখানে প্রায় ৬০০ শত শ্রমিক কাজ করছিল। সদর উপজেলা সদর থেকে যাতায়ত সড়ক র্দূগম হওয়ায় প্রশাসন কিংবা ইউনিয়নের অনেকে জানেনা এ অবৈধ কার্যক্রমের বিষয়ে। আনুমানিক ১৫ ফুটের মত লম্বা কাঁচা চিমনী দিয়ে তৈরী ড্রাম চুল্লির এ ইট ভাটার জ্বালানী হিসেবে বনের মূল্যবান চারা গাছ পুড়ানোর ফলে কালো ধুঁয়া চার পাশে চড়িয়ে পড়ছে।
ইট ভাটার কর্মরত কয়েকজন শ্রমিকের সাথে কথা হলে তারা আমাদের প্রতিবেদককে বলেন, কৃষি উৎপাদনের মাটি ও লাকড়ী দিয়ে ইট পুড়ানোর কথা স্বীকার করেন। তবে উক্ত ইট ভাটা অবৈধ হলেও চুক্তির ভিত্তিতে তারা কাজ করেন বলে জানান। এছাড়াও ইটভাটার কাঁচা মাল হিসেবে পার্শ্ববর্তী কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে মাটি এনে স্তপ করার দৃশ্য দেখা গেছে।
সদর উপজেলায় ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নে চরভূর্তী বয়ার দঘি এইচ এইচ ব্রিকস্ মালিক বাচ্চু চর এলাকায় প্রশাসনের অগোচরে এ ইটভাটায় অবৈধ ভাবে ইট পুড়ার কাজ চলছে। গত বছর স্থানীয় ও পরিবেশবিদ গণমাধ্যম কর্মীরা ইট ভাটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসক জনস্বার্থে অবৈধ ই্ট ভাটা স্থাপনার গুলো বন্ধ করে দিলেও বর্তমানে পূর্ণরায় কাজ শুরু করছে। সদর উপজেলার ক্ষমতাশীল দলের দাপট দেখিয়ে আধাঁর মালিক নতুন তেওয়ারীগঞ্জ , চরমুটুয়া ফরাশগঞ্জ , ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের জনৈক চার ব্যবসায়ী মালিক জবি উল্লাহ পাটোওয়ারী, খোরশেদ, পাটনার মোচ্ছম্মের হোসেন মাসুম, বিপু , চরর্ভূতি বয়ার দঘির বাচ্চু অবৈধ ভাবে ইট পুড়ে যাচ্ছে।
অবৈধ কাঁচা চুল্লি ইট ভাটার বিষয়ে আর বি. এম ব্রিকস্ এর মালিক জবিউল্ল্যা পাটোওয়ারী সহ কয়েক জনের মতামত জানতে চাইলে তারা এই প্রতিবেদককে ক্ষমতাশীল দলের দাপট দেখিয়ে বলেন আমাদের ইট ভাটা কিভাবে চলছে তা জানার ইচ্ছা থাকলে জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি আরো বলেন আমি চেকজালিয়াতি মামলায় পড়েছি। আপনারা আমার বিরুদ্ধে যত লেখার লেখেন। ইট ভাটার বৈধতার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। হাইকোর্টের রিটের কপি নিয়ে আপাতত ড্রাম চুল্লি দিয়ে ইট ভাটায় কাজ চলছে। জেলা প্রসাশকের অনুমতি আছে বলে তিনি এক বাক্যে স্বীকার করেন। তিনি আরো বলেন আমরা কাঁচা ইট ভাটার মালিকেরা এল আর ফা-ে টাকা দিচ্ছি।
কৃষি ও পরিবেশ বিদদের গণের মতে কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে ইট ভাটায় নেওয়ার ফলে এলাকায় কৃষি বিপ্লব মারাত্মক ব্যাঘাত হচ্ছে। এছাড়া ও জনবসতি পূর্ণ এলাকায় এসব ইটভাটার কালো ধুয়ার পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হলেও সংশ্লিষ্টদের কাছে যেন এসবের কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
উল্লেখ্য সংরক্ষিত এলাকায় ইটভাটার স্থাপন করলে পাঁচ বছরের কারাদ- এবং পাচঁ লক্ষ টাকা অর্থ দ- বিধান রেখে জাতীয় সংসদে পাশ হওয়ার ইট ভাটার স্থাপন (নিয়ন্ত্রন ) বিল ২০১৩ আইনের ই্টভাটার জ্বালানী হিসেবে কাঠ ব্যবহার নিষিদ্ধ রয়েছে। আর অনুমোধন না নিয়ে ইট-ভাটা খুললে এক বছরের কারাদন্ড এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু এ আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়ে স্থানীয়রা প্রশ্ন তোলেন
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুজ্জামান এর নিকট যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাদের প্রতিবেদককে বলেন, অতিদ্রুত ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে অবৈধ ইট ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখিত বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো: জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন অবৈধ ইট ভাটা গুলো চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। …………….চলবে।
Check Also
সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে দুবলার চরে গেলেন ৪০১জন পূণ্যার্থী
উপকূলীয় অঞ্চল (শ্যামনগর): পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে অনুমতি নিয়ে বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে রাস মেলায় গেছেন …