নিজস্ব প্রতিবেদক : ভ্যাট দিচ্ছে জনগন,দেশের হচ্ছে উন্নয়ন” এই স্লোগানকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় “জাতীয় ভ্যাট সপ্তাহ”৯-১৫ডিসেম্বর ২০১৬ উ্পলক্ষে এক বর্ণাঢ্য র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সকাল ১০ টায় কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ সাতক্ষীরার আয়োজনে পলাশপোল থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে পলাশপোলে কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের কার্যালয় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সভার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এসময় র্যালীতে উপস্থিত ছিলেন কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ ভোমরার সহকারী কমিশনার মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, জেলা রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল লতীফ,সাতক্ষীরা চেম্বার অব কর্মাসের উর্ধ্বতন সহ সভাপতি ইনছান বাহার বুলবুল, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন,মোঃ শহিদুল ইসলাম মৃধা,গোলাম ফারুক,বাবলু মিয়া,শারমিন আক্তার,শামসুল ইসলাম,রেস্তরা মালিক সমিতির জেলা সভাপতি নুরুল ইসলাম,সাধারন সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমানসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় সভায় বক্তারা বলেন ভ্যাট ও করের টাকা দিয়েই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। ভ্যাট ছাড়া দেশের উন্নয়নের কোন উপয় নেই।তাই দেশের বহুমুখী উন্নয়নের জন্য যথাযথ পরিমান ভ্যাট দেওয়ার আহবান জানান ।
দরিদ্র মানুষ ও কর বৈষম্য
আব্দুল আলিম
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে বেশ এগিয়ে গিয়েছে, যেমন: প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির হার বৃদ্ধি, মা ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, দারিদ্রতা হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন প্রভৃতি। এ উন্নয়নের পাশাপাশি সরকারের জন্য কিছু বড় চ্যালেঞ্জও আছে যার মধ্যে অথনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ অন্যতম। আর এ সমস্যা শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য নয় সারা পৃথিবীর জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ! সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে পরোক্ষ কর বৃদ্ধির প্রবণতা এ সমস্যাকে আরো উস্কে দেয়া সহ স্বল্প আয়ের মানুষের উপর আর্থিক চাপও বৃদ্ধি করেছে। ধনী-দরিদ্রের এ বৈষম্য হ্রাস করার জন্য প্রগতিশীল কর ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করের ওপর বেশি জোর দিয়ে দরিদ্র জনগণের উপর পরোক্ষ করের বোঝা কমাতে হবে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে করের আওতা না বাড়িয়ে করের বোঝা বৃদ্ধি করাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। আবার ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের রাজস্ব প্রাপ্তির খাত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, প্রত্যক্ষ করের তুলনায় পরোক্ষ কর থেকে প্রাপ্তি অনেক বেশি যার দায়ভার মূলত সাধারণ জনগণের উপরই বর্তেছে। অন্যদিকে, উন্নত দেশগুলোর সংগৃহীত কর রাজস্বের সিংহভাগই আসে আয়কর খাত থেকে যেখানে বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ করের অবদান মাত্র ২৫ শতাংশ এবং পরোক্ষ করের ৭৫ শতাংশ। ভারতে যেখানে ৭ শতাংশ আসে পরোক্ষ কর থেকে এবং ৯৩ শতাংশ প্রত্যক্ষ কর থেকে। মালয়েশিয়ায় ৬ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ৭ শতাংশ ও কানাডায় ৫ শতাংশ রাজস্ব আসে পরোক্ষ কর থেকে এবং যথাক্রমে ৯৪ শতাংশ, ৯৩ শতাংশ ও ৯৫ শতাংশ আসে প্রত্যক্ষ কর থেকে। অন্যদিকে, কর ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে। যেমন: বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে বিদেশি বহজাতিক কোম্পানিগুলো ২০১৩ সালে ৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার বা ৭০০ কোটি টাকা কর কম দিয়েছে। মূলত এ কোম্পানিগুলোর সাথে সম্পাদিত দ্বৈতকর অব্যাহতি চুক্তিগুলোতে এমন শর্ত থাকে যেখানে কর কম দিয়ে বিদেশি কোম্পানীগুলো মুনাফা নিয়ে যেতে পারে। (সূত্র: প্রথম আলো, ২৯ মে ২০১৬)। ফলে দরিদ্র মানুষের উপর পরোক্ষ করের বোঝা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কর ন্যায্যতা হ্রাস হচ্ছে। কিন্তু অর্থনৈতিক এ বৈষম্য দূর করার জন্য আমাদের দেশীয় বাস্তবতার নিরিখে দ্রুত প্রয়োজনীয়কাঠামোগত সংস্কারের পদক্ষেপ নিয়ে সাধারণ জনগণের উপর পরোক্ষ করের বোঝা কমাতে হবে।প্রচারে: আশালোককেন্দ্র,সহযোগিতায় এসপিইডি ও একশনএইড ।