সোমবার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দীপ্ত টিভি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে এ দাবি জানান এর নেতারা। তাদের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ‘আলোচনার টেবিলে’ বসার আহ্বান জানিয়েছে দীপ্ত কর্তৃপক্ষ। আর কেবল অপারেটররা বলছেন, আলোচনা না করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।
সোমবার সকাল থেকে এফটিপিওর নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা রাজধানীর সাতরাস্তা মোড়ে একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে কারওয়ান বাজারের দীপ্ত কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় দীপ্ত কার্যালয়ের সামনে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশি পাহারার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অবস্থান কর্মসূচি। এতে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, এফটিপিওর আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ, সদস্য সচিব গাজী রাকায়েত, অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ, নাদের চৌধুরী, আমিরুল হক চৌধুরী, কেএস ফিরোজ, জাকিয়া বারী মম, নওশিন, স্বাগতা, চয়নিকা চৌধুরী, শামীমা তুষ্টি, ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এসএ হক অলিক, নাট্যকার সংঘের সভাপতি মাসুম রেজা প্রমুখ।
এ সময় ‘সমাজ ও কৃষ্টিকে অবমাননা করে এমন সিরিয়াল বন্ধ করতে হবে’, ‘বিজ্ঞাপনের অত্যাচার থেকে দর্শকদের রক্ষা করতে হবে’, ‘নারীকে হেয় করে তৈরি করা সিরিয়াল প্রচার বন্ধ কর’সহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ করেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।
সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, ‘আমাদের ভাষা-সংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে কোনো অনুষ্ঠান যেন না দেখানো হয়। এখানে আসার পর আমাদের আশা ছিল, দীপ্ত কর্তৃপক্ষ একত্মা প্রকাশ করবে; কিন্তু তারা কোনো সাড়াই দিল না। বরং নিরাপত্তা বাড়িয়ে রেখেছে। আমরা ভাংচুর করতে আসিনি। শুধু জানাতে এসেছি, ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
দীপ্ত টিভিকে ‘নব্য রাজাকারের চ্যানেল’ আখ্যা দিয়ে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘যারা ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবসে কোনো বাংলাদেশি অনুষ্ঠান প্রচার না করে সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বিদেশি সিরিয়াল সুলতান সুলেমান প্রচার করতে পারে তারা রাজাকার নয়তো কী? বাঙালি সংস্কৃতি ও দেশের সামাজিক অবক্ষয় হয় এমন অনুষ্ঠান কোনো চ্যানেলে প্রচার করা যাবে না।’
প্রতিবাদ সভায় জানানো হয়, মঙ্গলবার বেলা ১১টায় একুশে টিভির সামনে অবস্থান নেবেন এফটিপিওর সদস্যরা।
দীপ্ত কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
এফটিপিওর আন্দোলন ও দাবি প্রসঙ্গে গতকাল দীপ্ত টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী উফরী আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত। এফটিপিও নেতারা মাত্র একবার আমাদের সঙ্গে বসেছেন। এর পর থেকে তারা আন্দোলন করে আসছেন। আমরা এখনও আলোচনার পথ খোলা রেখেছি।’
বিজয় দিবসের দিন সুলতান সুলেমান প্রচারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবসে আমরা দেড় ঘণ্টা সরাসরিসহ মোট সাড়ে ৯ ঘণ্টা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচার করেছি। যার মধ্যে তিনটি প্রামাণ্যচিত্রও রয়েছে। আমাদের এ ভালো কাজগুলো তারা না বলে শুধু এটিই বলছেন।’
কেবল অপারেটরদের বক্তব্য
কেবল টিভি উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি মীর হোসাইন আখতার সমকালকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে এ ধরনের বক্তব্য প্রদান ঠিক নয়। আলোচনা সাপেক্ষে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’