মাসুদ সাঈদীকে উপহার দেওয়া হয় বিজয়ের শুভেচ্ছা স্মারক
ক্রাইমবার্তা ডটকম
19/12/2016
পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলায় বিজয় দিবসের প্যারেডে সালাম গ্রহণ করেন যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুত্র মাসুদ সাঈদী -সংগৃহীত
পিরোজপুর প্রতিনিধি
পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলায় মহান বিজয় দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী। গত শুক্রবার জিয়ানগরে বিজয় দিবসের প্যারেডে সালাম গ্রহণ করেন সাঈদীপুত্র জিয়ানগর উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী। এমনকি মুক্তিযোদ্ধারা তার হাত থেকে সম্মাননা ও পুরস্কারও গ্রহণ করেন। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে সাঈদীর বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী মামলার বাদীও রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধীর ছেলের অতিথি হওয়া ও মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়াকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধকে অপমান বলে আখ্যায়িত করেছেন।বিজয় দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে তোলা ছবি নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন মাসুদ সাঈদী। ছবিতে তিনি লিখেছেন, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জিয়ানগর উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলের সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। পুরস্কার নিচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব বেলায়েত হোসেন, বর্তমান উপজেলা ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বপন কুমার রায়, সাবেক কমান্ডার মাহবুবুল আলম হাওলাদার (আমার আব্বার মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী), মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার ফকির।’
জানা যায়, ওই দিন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাসুদ সাঈদীকে উপহার দেওয়া হয় বিজয়ের শুভেচ্ছা স্মারক। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানেও প্রধান অতিথি ছিলেন।
এ ঘটনায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে একাত্তরের শহীদ আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বিজয়ের ৪৬তম বছরের প্রথম সকাল হতবাক করেছে। রাজাকারপুত্র এবং মুক্তিযোদ্ধারা একসঙ্গে বিজয় দিবস উদযাপন করছে। আর আমরা দেখছি। কী সুন্দর সকাল হওয়ার কথা ছিল আজ, তাই না !!’ সমুদ্র সৈকত নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘রাজাকার সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীর হাত থেকে বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধারা সম্মাননা ও পুরস্কার নিয়েছেন! এর চেয়ে অপমান আর কী হতে পারে !! আসুন, আমরা লজ্জায় মরে যাই!’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সমীর কুমার দাস বাচ্চুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সমকাল