কলেজছাত্র গৌতম হত্যারকারীদের ফাঁসির দাবীতে উত্তাল সাতক্ষীরা # ব্যর্থতার দায়ে সদর থানার ওসির পদত্যাগের দাবী

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা:3 অপহরণের পর কলেজছাত্র গৌতমকে হত্যার ঘটনায় পুলিশের ব্যর্থতাএবং জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাতক্ষীরা। এ ঘটনায় মঙ্গলবার কয়েক হাজার জনতা সাতক্ষীরা শহরে প্রতিবাদ সভা, বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে।এসময় গোটা শহর অচল হয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ সভা ও মানবন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। পরে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় গৌতমের বাবা গণেশ সরকার বলেন, মামলার তদন্তে গাফিলতি করছে পুলিশ। হত্যাকান্ডর মূল হোতা জামসেদকে আটকের পর টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা, ওসি (তদন্ত) ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আসাদকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।
পুত্র হত্যার বিচার দাবি করে সাতক্ষীরার কলেজ ছাত্র গৌতম সরকারের শোকার্ত বাবা ইউপি সদস্য গনেশ সরকার বলেন গৌতম আপনাদের সন্তান।
মঙ্গলবার সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত দুই ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা শহরের নিউমার্কেট চত্বরে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় ।
মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচিতে হত্যার নৃশংসতার বিবরন দিয়ে তারা বলেন কয়েকজন আসামিকে গ্রামবাসী ধরে এনে সোপর্দ করার পর পুলিশ তাদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েও গৌতম সরকারকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। একইভাবে হত্যার মূল নায়ক জামশেদকে সাতক্ষীরা থানা থেকে অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়ে হত্যায় সহায়তা করেছে পুলিশ। তারা বলেন হত্যার সাথে জড়িত পাঁচজনকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হলেও অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের ব্যাপারে পুলিশের ভূমিকা যথেষ্ট নয়। পুলিশ এই হত্যা নিয়ে নানা ধরনের লুকোচুরি খেলছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. নজর“ল ইসলাম, ঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান, এসএম শওকত হোসেন,মো. শাহাদাত হোসেন, এড. ওসমান গনি. এড. শাহনাজ পারভিন মিলি, এড. ফাহিমুল হক কিসলু, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, বিশ্বজিত সাধূ,স্বপন কুমার শীল, গোষ্ঠবিহারী মন্ডল, মুক্তিযোদ্ধা হাসান ইমাম, মাধব দত্ত , অসীম চক্রবর্তী, মো. আবু সাঈদ, তাপস আচার্য, নিহতের পিতা গণেশ সরকার প্রমুখ।
তারা গনেশ সরকার পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেন। 5
পরে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহীদ আলাউদ্দিন চত্বরে যেয়ে শেষ হয়। সেখানে সাতক্ষীরা- যশোর সড়ক অবরোধ করে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দের বিশ্বজিৎ সাধু, স্বপন কুমার শীল, গোষ্ট বিহারী প্রমুখ।
গত ১৩ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের মহাদেবনগর গ্রামের ইউপি সদস্য গনেশ সরকারের ছেলে কলেজ ছাত্র গৌতম সরকারকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে তার বাড়ির পাশে হত্যা করে শরীরে ইট বেঁধে পুকুরে মধ্যে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজন আসামিকে
এদিকে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান,
পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে সাতক্ষীরার কলেজ ছাত্র গৌতম সরকারকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে আগে থেকে তাকে হত্যার কোনো উদ্দেশ্য তাদের ছিল না।
গৌতম হত্যার সাথে জড়িত এজাহারভূক্ত পাঁচ আসামির দুইজন শাহাদাত হোসেন ও নাজমুল ইসলামের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাতে পুলিশ সুপার একথা বলেন।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামি মহাদেবনগর গ্রামের সাজু হোসেন সম্প্রতি বিয়ে করেছে স্থনীয় সুড়িঘাটা গ্রামে। তার খুব টাকার প্রয়োজন। এজন্য সে তার প্রতিবেশি ইউপি সদস্য গনেশ সরকারকে টার্গেট করে। তিনি বলেন আটক শাহাদাত ও নাজমুলকে সাজু হোসেন গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় টেলিফোনে ডেকে আনে। পরে তারা শলা পরামর্শ করে সদস্য গনেশ সরকারের একমাত্র ছেলে কলেজ ছাত্র গৌতমকে ফোনে ডেকে আনে। গৌতমের ফোন দিয়ে তার বাবার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চায় শাহাদাত। এই টাকা না পেয়ে তারা গৌতমের হাত পা ও মুখ বেঁধে মুখে গুলের কৌটা ঢুকিয়ে দেয়।
দুই আসামির জবানবন্দির ভিত্তিতে তিনি আরও বলেন ওই রাতে ঘটনাস্থলে কয়েকজন লোককে আসতে দেখে তারা গৌতমকে সরিয়ে নেয়। এ সময় গৌতম গড়াতে গড়াতে গিয়ে পুকুরের পানিতে পড়ে মারা যায়। পরে তার লাশের সাথে ইট বেঁধে পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। চারদিন পর তার লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়।–

Check Also

আশাশুনি সদর ইউনিয়ন জামায়াতের ৮টি ওয়ার্ডে আংশিক কমিটি গঠন

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি প্রতিনিধি।।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আশাশুনি সদর ইউনিয়নের ৮টি ওয়ার্ডে আংশিক কমিটি গঠন করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।