শামীম ওসমানের কেন্দ্রে ভোট দিতে পারেনি ভোটারা

ক্রাইমবার্তা রিপোট: শামীম ওসমানের নিজ কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ বার একাডেমি থেকে ভোট দিতে না পেরে প্রায় হাজারখানেক ভোটার ফিরে গেছেন। অনেক ভোটার এই এলাকার স্থানীয়। অতীতে একাধিকবার এখানে ভোট দিলেও তাদের কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, এবার তারা এখানকার ভোটার না। ফলে তারা হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।

ভোটারদের অভিযোগ, তাদের আশংকা কোনো একটি মহল ভোটারদের ইচ্ছাকৃতভাবে নিরুৎসাহিত করছে। খানপুর এলাকার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত দুই কাউন্সিলর প্রাথীও এই প্রতিবেদকের কাছে একই অভিযোগ করেছেন।26

প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ভোট দিতে এই কেন্দ্র থেকে ওই কেন্দ্র ঘুরছেন মুনমুন- আসকারী দম্পতি। ভোটারদের সহায়তা করতে, কোন কেন্দ্রে ভোট দিবে ও ভোটার নাম্বারসহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা ভোটারদের নামে ছাপানো স্লিপ দিয়ে আসে। সব দলের প্রার্থীরাই এ কাজ করে। আসকারী দম্পতিকে দেওয়া ওই স্লিপ নিয়ে বার একাডেমি কেন্দ্রে আসলে, কেন্দ্র থেকে তাদের জানানো হয়, তারা এই কেন্দ্রের ভোটার না। যেতে বলা হয় অন্য কেন্দ্রে। অন্য কেন্দ্রে যাওয়ার পর আবার ফেরত পাঠানো হয় বার একাডেমী কেন্দ্রে। এভাবে দুই ঘণ্টা ঘুরে ভোট না দিয়েই ফিরে গেছেন তারা।

স্বপন কুমার সাহা ঢাকায় থাকেন। স্ত্রীকে নিয়ে ভোট দিতে নিজ এলাকা নারায়ণগঞ্জের খানপুরে এসেছেন। সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রে ঘুরতে ঘুরতে দুপুর পেরিয়ে যাবার পরও ভোট দিতে পারছেন না তারা। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন স্বপন কুমার। ভোটারদের সহায়তা করার জন্য দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন কর্মীর সাথে চিৎকার করতে থাকেন। এসময় পরিবর্তন ডটকমকে তিনি বলেন, ‘হয়রান হয়ে গেছি, এখন ভোট না দিয়েই ফিরে যাবো। আমার মনে হচ্ছে, ভোটাররা যেন ভোট না দিয়ে ফিরে যায় সেজন্যই এ ধরনের হয়রানি করার চক্রান্ত করেছে কোনো পক্ষ। এখানে দলের ভেতরেই কোন্দল, উপরে চুপ থাকলেও ভেতরে ভেতরে ষড়যন্ত্র ঠিকই চলছে।’

একইভাবে স্থানীয় বাদশা মিয়াও পরিবর্তন ডটকমের কাছে বলেন, ‘সকাল থেকে ঘাম ঝরালাম কিন্তু ভোট দিতে পারলাম না।’

ভোট কেন্দ্রের সামনে সমর্থকদের সাথে দাঁড়িয়েছিলেন বিএনপির কমিশনার প্রার্থী শওকত হাশেম। অনেক ভোটারকে তার কাছে গিয়ে সাহায্য চাইতে দেখা যায়। শওকত  হাশেম পরিবর্তনকে বলেন, ‘ভোটারদের হয়রানির জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন। কোনোকিছুই এবার গোছানো নেই, সব এলোমেলো। কমিশনের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যের সাথে কেন্দ্রের তথ্যের মিল পাওয়া যাচ্ছে না।’

ভোটারদের ভোট না দিয়ে ফিরে যাবার কথা স্বীকার করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কমিশনার প্রার্থী চঞ্চল পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘বুঝতে পারছি না কেন এমন হচ্ছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি ভোটারদের সহায়তা করার জন্য।’

একই অবস্থা নারায়ণগঞ্জের অনেক কেন্দ্রের। সিদ্ধিরগঞ্জ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তাতখানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও দেখা যায় ভোটাররা স্লিপ হাতে নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে গিয়ে দেখছেন তিনি ওই কেন্দ্রের ভোটার নন। পরিবর্তন ডটকমের সাথে কথা বলার সময় অনেক ভোটার এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

Check Also

‌‘আ.লীগ-বিএনপি বা যে কোনো রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা জামায়াতের নেই’

বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।