এ নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি উৎকণ্ঠাও বিরাজ করছে নারায়ণগঞ্জবাসী এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ রাজনৈতিক মহলে।
নির্বাচনী এলাকায় আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ভোট গ্রহণ ও ভোটারদের নিরাপত্তায় মাঠে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাড়ে ৯ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ব্যালটে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী হলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর নৌকা ও বিএনপি মনোনীত অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যে।
এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কোনো প্রার্থী দেয়নি। দলটি ডা. আইভীকে সমর্থন করেছে। অপরদিকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রার্থী কামাল প্রধান ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী মো. রাশেদ ফেরদৌস বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল (কোদাল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা) ও ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি এজহারুল হক (মিনার)।
এদিকে ৯টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের বিপরীতে ৩৮ জন এবং ২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৫৬ জন প্রার্থী রয়েছেন।
ইসির হিসাব অনুযায়ী, ২৭ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬২ ও মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৯ জন।
নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র ১৭৪টি। এর মধ্যে ৪টি অস্থায়ী কেন্দ্র রয়েছে। ভোটকক্ষের (বুথ) সংখ্যা ১ হাজার ৩০৪টি। ভোট গ্রহণে চার হাজারের বেশি নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নাসিক নির্বাচনে ১৩৭টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ, যা মোট কেন্দ্রের শতকরা ৭৯ ভাগ। নির্বাচনী এলাকার মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জের সবক’টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। বাকি কেন্দ্রগুলো বন্দর ও শহর এলাকায় অবস্থিত।
ঝুঁকিপূর্ণ ওইসব কেন্দ্রে নির্বাচনে গোলযোগের শংকা রয়েছে। প্রভাব বিস্তার করতে পারেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের নিরাপত্তায় অন্তত ১২ জন অস্ত্রধারীসহ ২৪ জন নিরাপত্তাকর্মী থাকবে।
এর আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে বুধবার মধ্যরাত থেকে সব ধরনের যানবাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বুধবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে আজ মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় লঞ্চ ও স্পিডবোট, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, ট্যাক্সি ক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক ও টেম্পো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে অনুমোদিত গাড়ি চলাচল করতে পারবে।
নাসিক নির্বাচনে ৩২০ জন পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন। এর মধ্যে ৯টি স্থানীয় সংস্থার ৩১৮ জন ও একটি বিদেশী সংস্থার দুইজন পর্যবেক্ষক রয়েছেন। এরই মধ্যে এসব পর্যবেক্ষক কমিশনের অনুমোদন নিয়েছেন।
জানা গেছে, নাসিক নির্বাচনে ৯টি সংস্থার ১৮৫ জন স্থানীয়ভাবে ও তাদের মধ্যে সাতটি সংস্থার ১৩৩ জন কেন্দ্রীয়ভাবে ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন এবং এশিয়া ফাউন্ডেশনের আওতায় দুইজন বিদেশী পর্যবেক্ষক এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।