ক্রাইমবার্তা রিপোট: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়নি, চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। মঙ্গলবার দুপুরে ভয়েস অব ডেমোক্রেসি- বাংলাদেশ আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
‘শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনকালীন সরকার: প্রেক্ষিত, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’ শীর্ষক এ সভায় তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গণনার পূর্বে গোপনে বা আড়ালে থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, ওই তিন কেন্দ্র এত ভোট পেয়েছেন সাখাওয়াত এবং এত পেয়েছেন আইভী। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, গোপন থেকে জানানো এবং সরকারি ফলাফল এক হয় কিভাবে?
তিনি বলেন, নাসিক নির্বাচনে প্রতিটি ভোট কেন্দ্র ‘কক্ষে’ বিশেষ টিম ছিল। ওই সব কক্ষে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেছেন, চুরিতে নয়, ডাকাতিতে বিশ্বাস করি। কথাটি যদি আমি নিজের কানে শুনিনি, তবে শোনার কথাটির উক্তি করলাম। ফলে আমাদের মনে সন্দেহ জাগতেই পারে কিছু তো হয়েছে।
নাসিক নির্বাচনে ইসি ও সরকারকে দোষারোপ করার মত ঘটনা ঘটেনি উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, নির্বাচনে যা ঘটেনি সেটা আমরা বলেনি। তবে নির্বাচনের এতো সুন্দর পরিবেশ করেছে যা বিগত নির্বাচনগুলোতে ছিল। সুতরাং রাতের বেলায় কি হয়েছে, তা জানি না, কিন্তু কিছু ঘটেছে। কারণ অপরাধীরা একই কৌশলে বারবার অপকর্ম করে না। এই বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে, সব কিছু যেনো আপনাদের জানানো হবে।
নির্বাচনের দিন অভিজ্ঞতা:
গয়েশ্বর বলেন, সকাল ৯ টার আগে ভোট কেন্দ্র কোন ভোটার ছিল এবং বিকেল ৩ টা পর ভোট কেন্দ্র ছিলো ফাঁকা। এছাড়া ভোটের দিন ভোটাদের মনে আতঙ্ক ছিল, কি হবে। ভোট দিতে পারবো কী। ভোট কেন্দ্রে যেতো পারবো তো। যদিও শেষ পর্যন্ত এ শঙ্কা দূর হয়েছে।
রেজাল্ট ‘ফলাফল’:
বিগত নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ ভোট পড়লে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ পর্যন্ত ভোটের কার্যক্রম চলে। আর ৮০ শতাংশের উপরে পড়লে ৪ টার পরও আরো ১ থেকে ২ ঘন্টা সময় বৃদ্ধি করা হয়। অথচ নাসিক নির্বাচনে বিকেল ৩ টা পর ভোট কেন্দ্রগুলো ফাঁকা ছিল। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ৮৩ শতাংশ ভোট হয় কিভাবে।
তিনি বলেন, কাউন্সিলরদের বেশীরভাগ প্রার্থী বিএনপির বিজয়ী হয়েছে। বেশীভাগ ভোট কেন্দ্রে বিএনপির কাউন্সিলর ধানের শীষের প্রার্থীর চেয়ে ১৩০০ ভোট বেশী পেয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, দলের ভোটাররা যদি বিএনপির কাউন্সিলরকে ভোট দেয় তাহলে ধানের শীষে কী দেবে না?
বিএনপির এ নেতা বলেন, শেখ হাসিনার অধিনে নির্বাচনে যাওয়া আর ট্রাকের নিচে মাথা দেওয়া একই কথা। রাজনীতি দলের ব্যক্তি ‘নিরপেক্ষ সরকার’ থাকলে সেই নির্বাচনে আমরা যাবো না। সাবেক বিচারপতি খায়রুল হকের মত ব্যক্তিদের নিয়ে যে নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক ব্যক্তির বাইয়ে ৩ মাসের জন্য নিরপেক্ষ সরকার হলেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে।
নাসিক নির্বাচনে দৃশ্যমান কিছু নয়, যা করার ক্ষমতাসীনরা রাতের আঁধারে করেছে বলে অভিযোগ করেন গয়েশ্বর।
আয়োজক সংগঠনের ফেলো জিল্লুর রহমান রিন্টু’র সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সংগঠনের প্রেসিডেন্ট মাহফুজ কবির প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।