ক্রাইমবার্তা ডেস্ক রিপোট:মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সহায়তা করতে ত্রাণবাহী জাহাজের বহর পাঠাচ্ছে মালয়েশিয়া। আগামী ১০ জানুয়ারি রাখাইনের উদ্দেশে ক্লাং বন্দর ছেড়ে যাবে মালয়েশীয় জাহাজ বহরটি। অসহায় রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিলি করে দুই সপ্তাহ পর আবার তা দেশে ফিরে যাবে। ত্রাণ বহরে এনজিও কর্মী, মিডিয়া কর্মী, একটি চিকিৎসক দল, সাবেক মন্ত্রী, ধর্মীয় নেতা, রাজনীতিবিদ ও নাবিকসহ ২শ জন লোক অংশগ্রহণ করবেন। বুধবার সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেটস টাইমস এমন খবর জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, মালয়েশিয়ান কনসালটেটিভ কাউন্সিল অব ইসলাম অর্গানাইজেশন্স (মাপিম), কেলাব পুতরা ওয়ান মালয়েশিয়া এবং অঞ্চলের বিভিন্ন এনজিওর উদ্যোগে এ ত্রাণবাহী জাহাজ পাঠানো হবে। ও জাহাজ বহরে করে রাখাইন রাজ্যের মানুষের কাছে প্রায় ২০০ টন চাল, চিকিৎসা সহায়তা এবং অন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ পৌঁছে দেওয়া হবে।
মাপিম এর মহাসচিব জুলহানিস জাইনল জানান, ‘মাউং-দ এবং বুথিদং এলাকায় রোহিঙ্গা কমিউনিটির মানুষদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য। দুর্গত এলাকাগুলোতে কারও প্রবেশের কোনোও সুযোগ নেই। এ যেন আরেক গাজা উপত্যকা, যেখানে সেনা আক্রমণ আর অন্য দেশের (বাংলাদেশ) সীমান্তের মধ্যকার সংকীর্ণ এক পরিসরে আটকা পড়েছেন দুর্গতরা। ফলে সব ধরনের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ হয়ে আছে। পৌঁছানো যাচ্ছে না মানবিক সহায়তাও।’
জুলহানিস জাইনল বলেন, সহায়তা নিয়ে যাওয়ার সময় জাহাজ বহরটি তিনটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে। সেগুলো হলো, এমন হতে পারে যে জাহাজ বহরটিকে তীরে পৌঁছে সরাসরি ত্রাণ বিতরণের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। আবার জাহাজ বহরটিকে মিয়ানমারের পানিসীমা থেকে ফেরত পাঠানো হতে পারে। এছাড়া জাহাজ বহরটি মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর আক্রমণের শিকার হতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।
এ বছর অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি, এরপর থেকেই রাখাইন রাজ্যে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। রোহিঙ্গা মুসলমানদের ইসলামি চরমপন্থা দমনে কাজ করছেন বলে দাবি করছেন তারা। সেখানে সংবাদমাধ্যমকেও প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। জাতিসংঘ এরইমধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ এনেছে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকা-েরও অভিযোগ তোলা হয় দুই দফায়। এবারের সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যের মৃতের সংখ্যা ৮৬ জন বলে জানিয়েছে তারা। জাতিসংঘের হিসাব মতে, এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। পালাতে গিয়েও গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে তাদের। সূত্র : ডন উর্দু, দৈনিক পাকিস্তান উর্দু ও বাংলা ট্রিবিউন