ক্রাইমবার্তা রিপোট: থার্টি ফার্স্ট নাইটে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। তার পরও নগরবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকায় থার্টি ফার্স্ট নাইটে উম্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। অনুমতি সাপেক্ষে ক্লাব, হোটেল ও রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান করা যাবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে থার্টি ফার্স্টের নিরাপত্তা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
এ সময় তিনি, থার্টি ফার্স্ট নাইটে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, মদের বার, উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান, জনসমাবেশ ও লাইন্সেসকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহনের উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন কমিশনার।
পুলিশ কমিশনার বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বিশেষ নজরদারী রাখা হবে বলেও জানান কমিশনার। হলি আর্টিজানে উগ্রবাদী হামলার পর রাজধানীর কূটনৈতিক পাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে আরো বেশি তৎপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, জননিরাপত্তার জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্পটে বসানো হবে চেক পোস্ট। ওই দিন নগরবাসীর নিরাপত্তায় মাঠে থাকবে পুলিশের ১০ হাজার সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সন্ধ্যা ৬টার পর বহিরাগত কোন ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র আইডি কার্ড দেখিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন। ক্যাম্পাসে বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি নিয়ে নীলক্ষেত ও শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন।
গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বাসিন্দারা রাত ৮টার মধ্যে স্ব স্ব এলাকায় চলে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এসব এলাকায় প্রবেশের জন্য কাকলী ও আমতলী ক্রসিং খোলা রাখা হবে। তবে নির্ধারিত সময়ের পরও পরিচয় দিয়ে এ দুটি ক্রসিং দিয়ে গুলশান, বনানী ও বারিধারার বাসিন্দারা প্রবেশ করতে পারবে। জনগণের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যারা বসবাস করেন না তাদের ওই সব এলাকায় যেতে নিরুৎসাতি করেছেন কমিশনার।
কমিশনার বলেন, রাজধানীবাসী কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে বাসায় থার্টি ফার্স্টের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবং পুলিশকে জানায় তাহেল বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া হবে।
থার্টি ফার্স্টের দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত মদের বার বন্ধ থাকবে। লাইন্সেসকৃত অস্ত্র বহনেও নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে উন্মুক্ত স্থানে, রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায় প্রকাশ্যে কোনো ধরনের সমাবেশ ও উৎসব করা যাবে না বলেও জানান তিনি।
ট্রাফিক ড্রাইভারশন ও পরামর্শ: গুলশান, বনানী ও বারিধারায় প্রবেশের সকল রাস্তা রাত ৮টা হতে বন্ধ রাখা হবে। তবে এসব এলাকার নাগরিকরা প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং আমতরী ক্রসিং (মহাখালী) খোলা থাকবে। রাত ৮টা হতে ক্ষেত্রে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা, ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বণানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারবাড়ি ক্রসিং, আমতলী ক্রসিং শুটিং কাব ক্রসিং, বাড্ডা লিংক রোড, গ্রুপ-ফোর, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ও নতুন বাজার এলাকা দিয়ে এসব এলাকায় নাগরিকরা প্রবেশের করতে পারবে। একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি ও যানবাহন কেবল মাত্র হাইকোর্ট-দোয়েল চত্বর-শহীদ মিনার, জগন্নাথ হলের দক্ষিণ গেট ও পলাশী মোড় রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারবেন। এসব এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অন্যসব ক্রসিং বন্ধ থাকবে। কেউ বেপরোয়া, মদ্যপ ও বিপজ্জনক অবস্থায় গাড়ি না চালাতেও বলা হয়েছে।