ক্রাইমবার্তা রিপোট:রহিম রেজা, রাজাপুর (ঝালকাঠি) থেকে
স্বপ্ন ছিলো অন্য মেয়েদের মতই সুখে-শান্তিতে স্বামীর সংসার করবে ঝালকাঠির রাজাপুরের বড়ইয়া গ্রামের বিষখালি নদীতীরের খাদিজা আক্তার (২২)। সেই স্বপ্ন নিয়েই পিতৃহারা দরিদ্র গার্মেন্টস কর্মী খাদিজাকে বিয়ে দেয়া হয় উপজেলার ভাতকাঠি গ্রামের আঃ ছালামের ছেলে বেল্লালের সাথে। সামাজিকভাবেই গত ৫ ডিসেম্বর তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর যথারীতি নব বধূ সাজিয়ে স্বামীর বাড়িতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু স্বামীর বাড়ির সুখ কপালে সইলো না খাদিজার। বিয়ের আলতা-হলুদ মোছার আগেই মাত্র ৩ দিনের মাথায় গত ৮ ডিসেম্বর মানুষিক রোগে আক্রান্ত হয় খাদিজা। তাকে কোনভাবে সামলাতে না পেরে সুস্থ্য হলে নেয়ার কথা বলে স্বামী বেল্লাল খাদিজাকে রেখে যান বুদ্ধি প্রতিবন্ধি মা কুলসুম বেগমের কাছে। প্রতিবন্ধী মা ও প্রতিবেশীরা খাদিজার মানুষিক পাগলামি নিয়ন্ত্রনে রাখতে নিরুপায় হয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে খাদিজার মাঝায় রশি দিয়ে ঘরের খাটের পায়ার সাথে বেঁধে রাখেন। ওই রাতে প্রতিবন্ধী মা কুনসুম ও মানুষিক প্রতিবন্ধী ভাই আরিফ ঘুমিয়ে পড়লে খাদিজা ছুটে যাবার জন্য হাতের কাছে থাকা দিয়াশলাইট দিয়ে রশি পুড়ে নিজের পড়নের কাপড়েও আগুন লেগে যায়। বাঁচার জন্য ঘরের বাইরে ছুটে গিয়ে শরীরে জ¦লন্ত আগুন নিয়ে রাস্তায় দৌড়াতে থাকে এবং চিৎকার করতে থাকেন খাদিজা। চিৎকার শুনে স্থানীয় আমিন ফকির ও নুরুল হক ফরাজিসহ লোকজন এসে এ অবস্থা দেখে আগুন নেভাতে খালে ফেলে আগুন নিভিয়ে উদ্ধার করে ঘরে নিয়ে আসে। আগুনে খাদিজার মাঝা থেকে নিচের অংশের চারপাশ অধিকাংশ পুড়ে যায়। খাদিজার চাচাতো ভাই রিক্সা চালক সেলিম হোসেন ও এলাকাবাসি জানান, সে ষষ্ঠ শ্রেনীতে থাকা অবস্থায় তার দিনমজুর বাবা সেকেন্দার আলী মারা যান। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মা কুলসুম বেগম অন্যের ঘরে ঝিয়ের কাজ করেন। একমাত্র ছোট ভাই আরিফ হোসেন শারিরীক ও মানুষিক প্রতিবন্ধি। সে কিছুই করতে পারে না। অন্য কোন আয়ের পথ নেই তাদের। বুদ্ধি প্রতিবন্ধি মা ও শারিরীক ও মানুষিক প্রতিবন্ধি ভাইটির মুখে এক মুঠো আহার তুলে দিতে বাধ্য হয়ে খাদিজাকে পারি জমাতে হল ঢাকার উদ্দেশ্যে। ১২ বছর বয়সে চাকুরি নিলো গার্মেন্টসে। তখন বিষখালি নদী তীরে মাথা গোজার একটু ঠাই ছিল তাদের। গত দুই বছর আগে তাও বিষখালি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। একই গ্রামের চাচাতো ভাই রিক্সাচালক সেলিম খলিফার বাসায় আশ্রয় নেয় তারা। খাদিজার আয় দিয়েই চলতো তাদের সংসার। গত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে মা-ভাইয়ের কাছে আসেন খাদিজা। বাড়িতে আসার পরে মা ও এলাকাবাসি মিলে গত ৫ ডিসেম্বর উপজেলার ভাতকাঠি গ্রামের আঃ ছালামের ছেলে বেল্লালের সাথে বিবাহ দেন তাকে। খাদিজার চাচাতো ভাই রিক্সা চালক সেলিম হোসেন ও প্রতিবেশী নুরুল হক ফরাজি জানান, এলাকাবাসী মিলে অগ্নিদগ্ধ খাদিজাকে ১৭ ডিসেম্বর রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তবরত চিকিৎক জানান রাজাপুরে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই, বরিশালে নিতে হবে এবং তাতে প্রায় ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন। কিন্তু টাকা না থাকায় তারা হতাশ হয়ে খাদিজাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। বিভিন্ন মানুষের কথায় পোড়া স্থান সারাতে ব্যবহার করতে থাকে লতা-পাতা। গত ১৪ দিন এভাবে গ্রাম্য চিকিৎসা সেবা চলার পর রাজাপুর সাংবাদিক ক্লাবের সংবাদকর্মীদের সহযোগীতায় এবং সোহাগ ক্লিনিকের আর্থিক সহায়তায় গত ৩০ ডিসেম্বর তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান ও উত্তমপুর গ্রামের সোহেল রানাসহ কয়েকজনের আর্থিক সহযোগীতায় তার চিকিৎসা চললেও বর্তমানে শেবাচিমের বার্ন ইউনিটের ২নং বেডে উন্নত চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন খাদিজা। তাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগীতার প্রয়োজন। সহযোগীতার জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১০৬৭৬৬২৯। বরিশাল শেবাচিমের বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার হাবিবুর রহমান জানান, খাদিজার কোমড়ের নিচের অংশের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। পোড়ার পরে বিনা চিকিৎসায় প্রায় ১৬ দিন থাকায় ক্ষতস্থান গভীরে গিয়ে কোষগুলো মরে মারাত্মক আকার ধারন করেছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া প্রয়োজন।
রাজাপুরে নাক কামড়ে কৃষকের গরু বিক্রির টাকা ছিনতাই
রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি
ঝালকাঠির রাজাপুরের জগাইরহাট এলাকায় গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মৃত আদম আলী হাওলাদারের ছেলে কৃষক মোঃ নান্নু হাওলাদারের (২৫) নাকে কামড় দিয়ে রক্তাক্ত করে গরু বিক্রির ৩৯ হাজার টাকা প্রতিপক্ষের লোকজন টাকা ছিনতাই করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাতে আহত নান্নু থানায় অভিযোগ দিয়ে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হয়। আহত নান্নু হাওলাদার অভিযোগ করে জানান, গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার বাঘড়ি হাটে গরু বিক্রি করা ৩৯ হাজার ৭’শ টাকা নিয়ে বাড়ি যায় এবং পারিবারিক কাজকর্ম শেষে সন্ধ্যায় ওই টাকা সাথে নিয়ে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি স্ত্রী খাদিজা ও ছেলে নাইমের কাছে যাওয়ার পথেমধ্যে জগাইরহাট এলাকায় প্রতিপক্ষের পরিচিত ২/৩ জন লোক পথরোধ করে মারধর করে এবং সাথে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা শুরু করলে নান্নু প্রতিপক্ষের একজনকে ঝাপটে ধরে এসময় নান্নুর নাক কামড় দিয়ে ছিড়ে রক্তাক্ত জখম করে টাকা ছিটিয়ে নেয়। নান্নু হাওলাদার আরও অভিযোগ করে জানান, গত শুক্রবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ওই লোকজন স্ত্রী খাদিজাকে পিটিয়ে ও ছেলে নাইমকে কুপিয়ে জখম করে। পুলিশ জানায়, তদন্ত করে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজাপুরে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ বিতরণী ক্যাম্প
রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি
ঝালকাঠির রাজাপুরে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে সেবাদানকারি বেসরকারি সংগঠন ক্রিটিকালিংকের আয়োজনে উপজেলা সদরের ৩০নং রাজাপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ স্বাস্থ্য ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য ক্যাম্প পরিচালনা করেন ক্রিটিকালিংকের বলান্টিয়ার কো-অর্ডিনেটর সৈয়দ জাকারিয়া আলম। বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খানমের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজাপুর সাংবাদিক ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা রহিম রেজা, সাংবাদিক কাওসার হোসেন ও মেহেদী হাসান জসিম। স্বাস্থ্য ক্যাম্পে চিকিৎসা সেবা দেন ডাক্তার মোতাহার উদ্দিন। দিনব্যাপি এ ক্যাম্পে বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি ওষুধ প্রদান করা হয়।
রাজাপুরে জাতীয় সমাজসেবা দিবসে র্যালি ও সভা
রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি
ঝালকাঠির রাজাপুরে র্যালি ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে জাতীয় সমাজসেবা দিবস পালিত হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলা সদরে র্যালি ও উপজেলা সভাকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা সমাজসেবা অফিস আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ভবাণী শঙ্কর বলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন যুব উন্নয়ন অফিসার আল আমিন বাকলাই, ইউপি সদস্য তৌহিদুল ইসলাম, সৈয়দ হোসাইন আহম্মদ কামাল ও আলমগীর শরীফ প্রমুখ।