ক্রাইমবার্তা ডেস্ক রিপোট: রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্যাতনের একটি ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর মিয়ানমারের কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে। দেশটির সরকার বলছে, ভিডিওতে যে ঘটনা দেখা যাচ্ছে সেটি গত নভেম্বর মাসে রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের সময় ঘটেছিল। খবর বিবিসির।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে প্রথমেই দেখা যাচ্ছে, রাস্তায় দু’জন কিশোরকে লাথি মারতে-মারতে এগিয়ে নিচ্ছেন একজন পুলিশ সদস্য।
এরপর দেখা যাচ্ছে, বহু পুরুষকে সারিবদ্ধভাবে মাটিতে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এদের সবার হাত মাথার পেছন দিকে উঠানো । তারপর এক ব্যক্তিকে মাটিতে বসিয়ে ক্রমাগত লাথি মারছে তিনজন পুলিশ সদস্য। একই সঙ্গে সে ব্যক্তিকে লাঠি দিয়েও পেটানো হচ্ছিল।
ধূমপানরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা সে ভিডিওটি ধারণ করেছেন বলে জানা যাচ্ছে।
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির অফিস থেকে জানানো হয়েছে, রোহিঙ্গা নির্যাতনে সে ঘটনাটির সঙ্গে চারজন পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত। সে ভিডিওতে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ধূমপান করতে দেখা যাচ্ছে যিনি এ নির্যাতনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে জানানো হয়েছে।
অং সান সু চির অফিস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে , প্রাথমিকভাবে যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের আটক করা হয়েছে। এ ধরনের নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত অন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে আরো তদন্ত হচ্ছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
গত অক্টোবর মাস থেকে রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগ উঠে। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, মিয়ানমারের সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের জাতীগতভাবে নির্মূলের চেষ্টা করছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে বাংলাদেশে সরকার জানিয়েছে।
মিয়ানমার সরকার সব সময় বলে এসেছে রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনী আইন মেনেই কাজ করছে।প্রথমবারের মত সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ হওয়া একটি রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভিডিওকে আমলে নিয়েছে মিয়ানমারের সরকার।
রোহিঙ্গা নির্যাতন থামানোর জন্য কোন পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন।