‘পুলিশ ধরে নিয়ে গেল থানায়, পরে বলে নিখোঁজ’

ক্রাইমবার্তা রিপোট: সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেসমিন ও তাঁর শ্বশুর রাশেদ। ছবি : এনটিভি

‘আমার ছেলেকে গত আগস্ট মাসে শহরের নিউমার্কেট এলাকা থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। তাঁর সঙ্গে পরপর দুই দিন থানায় দেখাও করেছিলাম। কিন্তু এরপর থেকে পুলিশ বলছে, ‘আমার ছেলে কোথায় তা তারা জানে না।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা শহরের কুখরালি গ্রামের শেখ মোকলেছুর রহমান জনির সন্ধান চেয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন তাঁর বাবা শেখ আবদুর রাশেদ।

এ সময় শেখ আবদুর রাশেদ আরো বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো অপরাধ করলে দেশের আইনে বিচার হোক। কিন্তু তার সন্ধান চাই।’

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জনির স্ত্রী জেসমিন নাহার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টায় জনি শহরের নিউমার্কেটে গিয়েছিল ওষুধ কিনতে। তখন সাতক্ষীরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হিমেল তাকে আটক করে। বিষয়টি জানার পর আমরা থানায় যাই। ওই সময় এসআই হিমেল বলেছিল, ‘জনির ব্যাপারে তদন্ত চলছে। নির্দোষ হলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’

জেসমিন আরো বলেন, থানায় গিয়ে স্বামীর সঙ্গে তিনদিন দেখা করেছি, তিন বেলা তাঁর খাবারও পৌঁছে দিয়েছি। এরপর ৮ আগস্ট সকাল থেকে পুলিশ বলতে শুরু করে, ‘জনি কোথায় তা আমরা জানি না।’

জনির স্ত্রী বলেন, ‘এসআই হিমেল আমার ও আমার শ্বশুর-শাশুড়ির জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি থানায় জমা দিতে বললে তা জমাও দিয়েছি। স্বামীর কোনো খোঁজ না পেয়ে থানায় একটি জিডি করতে গেলেও পুলিশ তা নেয়নি। তাই নিরুপায় হয়ে গত ২৪ আগস্ট পুলিশ সুপারের কাছে স্বামীর সন্ধান চেয়ে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এখনো স্বামীর সন্ধান পাইনি।’

সংবাদ সম্মেলনে জেসমিন আরো বলেন, আমার স্বামী পেশায় একজন হোমিও ডাক্তার। তিনি সপ্তাহের চারদিন কলারোয়ার লাঙ্গলঝাড়ায় আমাদের বাড়িতে (শ্বশুরবাড়ি) থাকতেন। বাকি দিনগুলো বাড়িতেই কাটাতেন। আমার বাবার কিছু জমি নিয়ে এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধিতা ছিল। জনি গিয়ে ওই জমিগুলো দেখাশুনা করতেন। এতে প্রতিপক্ষরা তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে ষড়যন্ত্রে ফেলতে পারে। জনি কোনো রজনীতি করতেন না। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। অথচ পুলিশ তাঁকে তুলে নিয়ে গেল। এত দিন সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েও পারিনি। নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছিল বলে জানান জনির স্ত্রী।

জনির বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে সাতক্ষীরা থানা থেকে বদলি হওয়া উপপরিদর্শক (এসআই) হিমেল বলেন, ‘অনেক আগের বিষয়। এ সম্পর্কে এখন কিছু মনে নেই।’

কলারোয়া থানায় বদলি হওয়া ওই সময়কার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক শেখ বলেন ‘পাঁচ মাস আগের কথা, এখন কিছুই বলতে পারছি না।’

Check Also

সাতক্ষীরা শহর শখার ২ নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে সভা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি সাতক্ষীরা শহর শখার ২ নং ওয়ার্ড (রাজারবাগান ও সরকারপাড়া ইউনিট) এর উদ্যোগে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।