পুড়ে গেছে নগদ টাকার বান্ডিলও

ক্রাইমবার্তা রিপোট: দুদিন আগেও সাজানো-গোছানো ছিল। সাজানো থাকত ছেলেদের বাহারি নকশার রেডিমেড স্যুট, শার্ট, প্যান্ট, চকমকে দামি বিদেশি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, জুতা। দিনের বেশির ভাগ সময় সরগরম থাকত গুলশানের ডিএনসিসি পুড়ে যাওয়ার আগে ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম থাকত ডিএনসিসি পাকা মার্কেটের কোলন অ্যান্ড কটন নামের দোকানটি। ছবি: সংগৃহীতমার্কেটের কোলন অ্যান্ড কটন নামের দোকানটি। এখন সবকিছু পুড়ে ছাই। কাপড়চোপড় তো নেই-ই, পুড়ে গেছে টাকার বান্ডিলও।

অগ্নিকাণ্ডের পর ঝলমলে দোকানটির সবকিছুই পুড়ে যাই। ছবি: কমল জোহা খানআজ বুধবার দুপুরে মার্কেটের দোতলায় ঢুকে দেখা গেল, কোলন অ্যান্ড কটন নামের দোকানটি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। ঝলমলে আলোর বদলে ঘুটঘুটে আঁধার। টর্চলাইট জ্বালিয়েও কিছু দেখা যায় না। সেখানে নিশ্বাস নিতে গেলে দম বন্ধ হয়ে যায়। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে শীতাতপযন্ত্র। মেঝেতে জমে আছে ছাই-পানি। ছড়িয়ে আছে বিদ্যুতের তার। গলে গেছে দোকানের কাচের দরজা। মেঝের টাইলস ভেঙে চুরমার।
লন্ডভন্ড থাকায় কোলন অ্যান্ড কটনের ভেতরে অবস্থান নিতে পারছেন না মালিক-কর্মচারীরা। তবে ধোঁয়ার মাত্রা কমে এলে ছুটে যাচ্ছেন প্রাণের কর্মস্থলে। সেখানে চোখের পানি ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার নেই তাঁদের। কোলন অ্যান্ড কটনের মালিক আখতারুজ্জামান জানান, স্যুট-প্যান্টের মতো পোশাকের চাহিদা বেশি থাকে শীতের সময়। এ জন্য প্রতিবছর শীত মৌসুমে পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য আনা হয় দোকানটিতে। ডিসেম্বরে মাঝামাঝি ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার পোশাক, ঘড়ি, জুতা কেনেন তিনি।গুলশান ডিএনসিসি মার্কেটের একটি দোকান থেকে পুড়ে যাওয়া টাকার বান্ডিল দেখাচ্ছেন মালিকেরা। ছবি : কমল জোহা খান
পুরো দোকানে প্রায় তিন কোটি টাকার পণ্যসামগ্রী ছিল জানিয়ে আখতারুজ্জামান  বলেন, ‘শীতকাল ও বিয়ের মৌসুমে আমাদের ব্যবসা তুলনামূলক ভালো হয়। জিনিস তো পুড়েছেই, আমার ট্রেড লাইসেন্স, হিসেবের নথিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে গেছে।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে আখতারুজ্জামান বলেন, ‘২ জানুয়ারি দিবাগত রাত দুইটার দিকে আগুন লাগে ডিএনসিসির কাঁচা মার্কেটে। পরে আশপাশে ছড়িয়ে যায় আগুন। কিন্তু এর ১৮ ঘণ্টা পর দোকানের কাছে যেতে পারি। ফায়ার সার্ভিসের এতগুলো ইউনিট থাকার পর পাকা মার্কেটে আমার মতো দোকানগুলো রক্ষা করা গেল না কেন?’
কোলন অ্যান্ড কটনের আশপাশের দোকানগুলোরও একই হাল। তবে দোকানের অবস্থা জানতে দীর্ঘ সময় মালিকদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের প্রায় দেড় দিন পর পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোয় আজ সকালে ঢুকতে পেরেছেন তাঁরা। কিন্তু অক্ষত কিছুই মেলেনি। তাঁরা পেয়েছেন ছাই-ভস্ম। তবে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে চান না এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। অনেকে তাই দোকানের শাটার খুলে পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন।

Check Also

৩০ জুলাই পর্যন্ত অনেক দল সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, সংগ্রামে যুক্ত হবে কি না: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।