ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরাকের মসুলে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের আমলের একটি বিশাল বাঁধ যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। এটি ভেঙে পড়লে ১৫ লাখ মানুষের প্রাণহানি হতে পারে।
প্রকৌশলী ও অন্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, টাইগ্রিস নদীর ওপর নির্মিত ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। এর ফলে রাজধানী বাগদাদ পর্যন্ত বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (নিয়ন্ত্রিত) নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বাঁধটির অবস্থান। এটি ১১ দশমিক ১ বিলিয়ন ঘনমিটার পানি ধারণ করতে পারে। ১৯৮০-এর দশকে নির্মাণের শুরুর সময় থেকেই এর নানা সমস্যা দেখা দিতে থাকে।
মাটি নরম হওয়ায় বাঁধের নিচে অনবরত গর্ত তৈরি হয়, এ কারণে বার বার এটাকে ধসে পড়া ঠেকাতে মেরামত করতে হয়।
২০০৬ মার্কিন কর্পস প্রকৌশল প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘মসুল বাঁধ বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ।’ তবে ২০১৪ সালে আইএস মসুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বাঁধটির রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত ১৫০০ কর্মী পালিয়ে গেছে। জঙ্গিরা তাদের বেশির ভাগ যন্ত্রপাতির নষ্ট করেছে।
সুইডেনের লুলিয়া ইউনিভার্সিটিরি অধ্যাপক নাধির আল-আনসারি বলেন, ‘এটা (ভেঙে পড়া) কেবল সময়ের ব্যাপার। ইরাকে পরমাণু বোমার ফেলার চেয়েও এটা খারাপ হবে।’ তিনি বাঁধটির নির্মাণ শুরু দিকে তদারকি করেছিলেন।
২০১৫ সালে ইউরোপিয়ান কমিশনের বিজ্ঞান কেন্দ্র জানায়, এমনকি বাঁধটির ২৬ শতাংশও যদি ভেঙে যায় তাহলে বিপর্যয়কর মাত্রায় বন্যা হবে।
১০০ ফুট উচ্চতার ঢেউয়ের তোড়ে দুই ঘণ্টার মধ্যে মসুল ডুবে যাবে। সেই পানিতে মানুষ, অবিস্ফোরিত বোমা, ভবন, গাড়ি, তেল শোধানাগারের বিষাক্ত উপাদান, মানববর্জ্য ভাসবে।
গত বছর জাতিসংঘ আশঙ্কা করেছিল, যেকোনো বন্যায় চল্লিশ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে।
বিশ্বব্যাংক বাঁধটির সংস্কার কাজের জন্য ৩০ কোটি মার্কিন ডলার মঞ্জুর করেছে। কিন্তু নিরাপত্তা পরিস্থিতি নাজুক হওয়ায় কাজ সম্পূর্ণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।