ক্রাইমবার্তা রিপোট: শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফের এক ‘স্বর্ণমানব’কে আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। বুধবার রাতভর নাটকীয়তার পর ভোরে এই ব্যক্তির কাছ থেকে ১২টি স্বর্ণবার উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই যাত্রীকে শুরু থেকেই শুল্ক গোয়েন্দারা নজরদারিতে রাখে। কাস্টমস হলের গ্রিন চ্যানেল অতিক্রম করে যাওয়ার সময় তাকে চ্যালেঞ্জ করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদেও তিনি স্বর্ণবার থাকার কথা অস্বীকার করেন। পরে শুল্ক গোয়েন্দার দল রাত ৩টায় তাকে উত্তরা উইমেন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে পেটের এক্সরে করান। এতে রেক্টামে ৩টি ‘অস্বাভাবিক বস্তু’ পাওয়া যায়।
এসময়, ওই যাত্রী তার আত্মীয় ‘বড় কর্মকর্তা’ বলে গোয়েন্দাদের হুমকি দিতে থাকেন। বের হয়ে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ‘দেখে নিবো’ বলেও সতর্ক করেন। এরপর শুল্ক গোয়েন্দাদের উদ্যোগে কর্তব্যরত ডাক্তার তলপেট কেটে স্বর্ণ বের করার জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যেতে চাইলে তিনি নমনীয় হন। অপারেশন ছাড়া স্বর্ণ বের করে দেবেন বলে ওয়াদা করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, পরে যাত্রীকে শাহজালালের কাস্টমস হলে নিয়ে এসে পানি খাওয়ানো হয়, দেওয়া হয় লুঙ্গি। এসময় লুঙ্গি পরে শুল্ক গোয়েন্দাদের উপস্থিতিতে টয়লেটের অভ্যন্তরে বিশেষ কায়দায় পায়ুপথ দিয়ে একে একে ৩টি কনডম বের করে আনেন ৩৩ বছরের যাত্রী শরীফ আহমেদ। বের করা ৩টি কনডমের ভিতর থেকে ৪টি করে মোট ১২ টি স্বর্ণবার পাওয়া যায়। এজন্য মালয়েশিয়াতে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি।
শুল্ক গোয়েন্দাদের জিজ্ঞসাবাদে আটক শরীফ জানান, নজরদারির হাত থেকে বাঁচার জন্য এই অভিনব পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। জীবনের ঝুঁকি থাকলেও টাকার জন্য এই পন্থা অবলম্বন করেন। তিনি একজন মুদি ব্যবসায়ী, গত ৩ জানুয়ারি ব্যবসার কাজে মালয়েশিয়া যান। গতবছর তিনি ১০ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছিলেন।
আটক ‘স্বর্ণমানব’ শরীফ আহমেদকে গ্রেফতার এবং অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উদ্ধার করা স্বর্ণ দ্রুত বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা করা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও শুল্ক গোয়েন্দা শাহজালালে স্বর্ণমানবের সন্ধান পেয়েছিলেন, যারা একই কায়দায় স্বর্ণ চোরাচালান করতো। সর্বশেষ গত ১৭ অক্টোবর এক যাত্রীর রেক্টাম থেকে ৮টি স্বর্ণবার উদ্ধার করা হয়েছিলো।