ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাজীপুর সংবাদদাতা, ঃ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ মান্নান জামিনে মুক্তি লাভ করেছেন।
শুক্রবার দুপুর একটার দিকে তিনি গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ থেকে মুক্তি লাখ করেন।
গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, অধ্যাপক এমএ মান্নানের উচ্চ আদালতে থেকে জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র কারাগারে পৌছানোর পর তা যাচাই বাচাই শেষে শুক্রবার দুপুরে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। তিনি গত বছর ১৬ এপ্রিল থেকে এ কারাগারে বন্দি ছিলেন।
মেয়র মান্নান শুক্রবার কারামুক্ত হচ্ছেন এমন খবরে সকাল থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী কারা ফটকে উপস্থিত হন। কারা ফটক থেকে তিনি বের হয়ে এলে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এসময় কারা ফটকে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. শহীদুজ্জামান, বিএনপি নেতা বশির আহমেদ বাচ্চু, আঃ খালেক ডিলার আকন্দ, কাউন্সিলর তানভীর আহমেদ, যুবদল নেতা আরিফ হাওলাদার, জসিম ভাট, ছাত্রদল নেতা নাসির উদ্দিন নাসির, আমিনুল ইসলাম, প্রমুখ।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৯নাং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তানভীর আহমেদ জানান, মুক্তি লাভের পর নানা রোগে আক্রান্ত অসুস্থ মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নানকে হাসপাতালে ভর্র্তি করা হবে।
উল্লেখ্য, গাজীপুরে যাত্রীবাহীবাসে পেট্রোলবোমা হামলার মামলায় গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার বারিধারার ডিওএইচএস’র নিজ বাসা থেকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) মেয়র ও বিএনপি নেতা অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মোট ২২টি মামলায় ১৩ মাস কারাবরণের পর গত ২ মার্চ অধ্যাপক এমএ মান্নান জামিনে কারামুক্ত হন। এপ্রিল মাসে তিনি মেয়র পদ ফিরে পান। এরপর গত ১৫ এপ্রিল রাতে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কালিয়াকৈরের মৌচাক এলাকা থেকে কয়েক সহযোগিসহ অধ্যাপক এমএ মান্নানকে আবারো গ্রেফতার করে পুলিশ। একই মাসে তাকে ফের বরখাস্ত করা হয়। পরে আরো মামলায় তাকে ‘শোন এ্যারেষ্ট’ দেখানো হয়।
সিটি কর্পোরেশনের ত্রাণ ও দরিদ্র তহবিলের টাকা আত্মসাতের দুদকের মামলায় ১৯ জুন মেয়র মান্নানকে সব শেষ গ্রেফতার দেখানো হয়। সর্বশেষ মামলাসহ তিনি আদালত থেকে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ২৮টি মামলার সবক’টিতে জামিন লাভ করেন।
এসব মামলার প্রায় সবগুলোই বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ ও হরতালকালে গাড়ী ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ, হত্যা, নাশকতা, বিস্ফোরক ও পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দানসহ বিভিন্ন আইনে দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দু’টি মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে।
মান্নানের অবর্তমানে ২০১৫ সালের ৮ মার্চ থেকে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।