ক্রাইমবার্তা রিপোট: সমাজ অপরাধমুক্ত করতে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি বিকল্প উপায় খোঁজার আহ্বান জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, আমরা দেখেছি শত শত বছর ধরে শাস্তি দিয়েও অপরাধ দমানো যায়নি, যাচ্ছে না। আজকের পৃথিবীতে নতুন নতুন অপরাধ দেখছি। যা এক সময় চিন্তাও করতে যেত না। তিনি বলেন, কেবল শাস্তি দিয়ে অপরাধ দমন করা যাবে না। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি অপরাধ দমনের বিকল্প উপায় বের করতে হবে।
সময়ের সাথে সাথে অপরাধের ধরনের পরিবর্তন ঘটছে। তাই অপরাধ দমন বা মোকাবেলা করতে হলে অপরাধের কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে। সে জন্য দরকার বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা।
আজ শনিবার বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রহমান মিলনায়তনে অপরাধ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও বিচারবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্রাইম অ্যান্ড জাস্টিস স্টাডিজে’র প্রথম বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন আইনমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্রাইম অ্যান্ড জাস্টিস স্টাডিজ’র চেয়ারপারসন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন। তিনি বলেন, পরিবার, সমাজ, সংস্কৃতি থেকে একজন ব্যক্তি অপরাধ বা সহিংসপ্রবণ হয়ে ওঠে। তাই এর বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা প্রয়োজন। অপরাধ দমনই নয়, একইসঙ্গে অপরাধের কারণ, ধরন-প্রকৃতি বিশ্লেষণ, বিভিন্ন তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে অপরাধ সংঘটনের ব্যাখ্যা খুঁজে বের করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভালডোস্টা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মিজানুর রহমান মিয়া ও সাউথ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শফিকুর রহমানও অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন।
আনিসুল হক বলেন, আদালতে ২৭ লাখ মামলা জটে আছে। কিন্তু অপরাধ বসে থাকবে না। অপরাধ বাড়লে মামলার সংখ্যাও বাড়বে। সমাজের যোগসূত্রগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, পরিবার হচ্ছে শিক্ষার মূল কাঠামো। এরপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠানগুলো মূল্যবোধ তৈরি করতো। কিন্তু এখন পরিবার-সমাজের যোগসূত্রগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাচ্ছে। যার ফলে অপরাধের মাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে। একে সমুন্নত করতে হবে। নয়, সহিংসতা, অপরাধ দমন বা প্রতিহত করা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে টেনে তিনি বলেন, সাইবার অপরাধ বলে নতুন একটি অপরাধের সৃষ্টি হয়েছে। এর জন্য অভিনব আইন তৈরি করা প্রয়োজন।সাইবার অপরাধ দমনে দেশীয় আইন ও বিচার কাঠামোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক যোগাযোগ গড়ে তোলার উপরও জোর দেন আইনমন্ত্রী।
১৯৬৬ সালের আগে ছিনতাই সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণাই ছিল না, উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যে একটি বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, এখন পথে-ঘাটে, অলিতে-গলিতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ অপরাধটি এখন এককভাবেও ঘটছে, সমষ্টিগতভাবেও ঘটছে।