ক্রাইমবার্তা রিপোট: মাদরাসায় না যাওয়ায় যশোরের মনিরামপুরের সুন্দলপুর গ্রামে আবদুর রহিম নামে ৯ বছরের এক শিশুকে ঘরের খুঁটির সঙ্গে শিকল ও দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত রহিমকে বেঁধে রাখা হয়। পরে প্রতিবেশিরা টের পেয়ে ওই শিশুর নানীর কাছ থেকে চাবি কেড়ে নিয়ে শিকল ও দঁড়ি খুলে দেয়।
রহিম খুলনার ফুলতলা বেজেরডাঙ্গা গ্রামের হাফিজুরের ছেলে। মাত্র ৭ মাস বয়সে মাকে হারায় আবদুর রহিম। হাফিজুর দ্বিতীয় বিয়ে করায় তাকে তার বাবার কাছে দেয়নি নানা শামছুর গাজী ও নানী নূরজাহান। এরপর থেকে সে সুন্দরপুর গ্রামে নানার বাড়িতেই থাকে। রহিম সুন্দরপুর মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।
শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রফিকুল ইসলাম মোবাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ সময় মেম্বারের সঙ্গেই ছিল শিশু রহিম।
শিশু আবদুর রহিম জানায়, মাদরাসায় না যাওয়ায় তার নানী ও মামী তাকে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত শিকল ও দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন।
রহিমের প্রতিবেশি নানী খাদিজা জানান, মাত্র ৭ মাস বয়সে মাকে হারায় আবদুর রহিম। রহিম খুলনা জেলার ফুলতলা বেজেরডাঙ্গা গ্রামের হাফিজুরের ছেলে। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করায় তাকে আর বাবার কাছে দেয়নি নানা শামছুর গাজী ও নানী নূরজাহান। এরপর নানার বাড়িতেই তার ঠাঁই হয়। রহিমের নির্যাতনের খবর পেয়ে পিতা হাফিজুর রহমান ছুটে আসেন।
তিনি জানান, ছেলেকে নিজের কাছে নিয়ে যেতে চাইলেও তাকে দেয়া হয়নি। নানার বাড়িতে মামী পলি খাতুনের প্ররোচনায় নানী নূরজাহান প্রায়ই রহিমকে শারীরিক নির্যাতন করে। এমনকি ঠিকমতো খেতেও দেয়া হয় না।
রহিমের নানী নূরজাহান বলেন, ‘একে তো মাদরাসায় যায়নি, তার ওপর বাড়িতে তাকে একা রেখে যাওয়া যাবে না বিধায় রহিমকে শিকল দিয়ে বেঁধে কারেন্ট বিল দিতে গিয়েছিলাম।’
রহিমের মামী পলি খাতুন বলেন, ‘শাশুড়ির নির্দেশে রহিমকে বেঁধে রেখেছিলাম।’
মনিরামপুর থানায় এসআই তপন কুমার বলেন, ‘আমি গিয়ে রহিমকে বাঁধা অবস্থায় পাইনি। তবে শিশুটির কাছে জিজ্ঞাসা করলে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছে।’