শেরপুরে ইউপি সদস্য ও আ.লীগ সভাপতির উদ্যোগে বাল্য বিয়ে!

ক্রাইমবার্তা রিপোট: বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় এক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ সভাপতি’র উদ্যোগে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাল্য বিয়ে হয়েছে। নিয়মবহির্ভূত এ বিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান লাঞ্ছিত হয়েছেন। গত শুক্রবার উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের পারভবানীপুর গ্রামের সরকার পাড়ায় ঘটনাটি ঘটে।36

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের পারভবানীপুর (সরকার পাড়া) গ্রামের আশরাফ আলীর অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া সুলতানা পারভীন (১৪) এর সাথে একই এলাকার জাবেদ আলীর ছেলে জনির (১৮) পারিবারিকভাবে বিয়ের আয়োজন করা হয়। বাল্য বিয়ের খবর জানাজানি হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম সরোয়ার জাহান পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহাবকে তা বন্ধের নির্দেশ দেন। পরে চেয়ারম্যান বিয়ে বাড়িতে গিয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধের জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু এতে মেয়ে পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করে।

খবর পেয়ে পুলিশ মেয়ের বাবা আশরাফ আলীকে থানায় নেওয়ার সময় সরকার দলীয় স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফর রহমান ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে গোপন আঁতাত করে তাকে ছাড়িয়ে নেয়। পরে বিয়ে বন্ধের নাটক সাজিয়ে দিনে বিয়ে পড়ানো থেকে বিরত থাকে। ওই দিন গভীর রাতে আওয়ামী লীগ নেতা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার, মাজেদুর রহমান তাদের বিয়ে সম্পন্ন করেন বলে অভিযোগ উঠে। এরপর গতকাল শনিবার ও আজ রোববার ছেলে ও মেয়ের বাড়িতে বিয়ে পরবর্তী অনুষ্ঠান হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, আমার এলাকায় কোন বিয়ে হবে কি হবেনা সেটা আমি বুঝবো। প্রশাসন, সাংবাদিক ও চেয়ারম্যান এরা কি? সব আইন দিয়েই দেশ চলেনা বলেও তিনি মন্তব্য করেন তিনি।

ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে আমি লাঞ্ছিত হয়েছি। এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিকারের ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে শেরপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক সামসুজ্জোহা বলেন, ছেলে ও মেয়ের উভয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম, কিন্তু অনুষ্ঠানে কাউকে খুঁজে পায়নি। তবে ওই মেয়ের বিয়ে গত শুক্রবার গভীর রাতে গোপনে হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন বলে মন্তব্য করেন।

উপজেলা নির্বাহি অফিসার একেএম সরোয়ার জাহান বলেন, ঘটনার দিন আমি এলাকায় ছিলাম না। তবে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশকে এ বিয়ে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। পরে কি হয়েছে তা জানা নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

Check Also

সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে দুবলার চরে গেলেন ৪০১জন পূণ্যার্থী

উপকূলীয় অঞ্চল (শ্যামনগর): পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে অনুমতি নিয়ে বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে রাস মেলায় গেছেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।