ক্রাইমবার্তা রিপোট: নির্বাচন কমিশন-ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সাথে সংলাপে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব ও হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন, শক্তিশালী ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন গণফোরাম নেতৃবৃন্দ। তারা রাষ্ট্রপতিকে বলেছেন, যেকোনো প্রভাব ও হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ছাড়া জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই সবাই একটি স্বাধীন, শক্তিশালী ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারে প্রত্যাশী।
আজ রোববার বিকেল চারটার দিকে গণফোরামের ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতিকে এসব প্রস্তাব দেন।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সাথে ছিলেন- সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মফিজুল ইসলাম কামাল, আ ও ম শফিউল্লাহ, মোশতাক আহমদ প্রমুখ।
বৈঠককালে রাষ্ট্রপতিকে নয়টি প্রস্তাব দিয়েছে গণফোরাম।
প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- ইসি গঠনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়া, কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা ও সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারি নিয়োগের ক্ষমতাসহ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কার্যকর ক্ষমতা সম্বলিত একটি আইন প্রণয়ণ। সততা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও আইনী জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্য হতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারগণকে নিয়োগ করা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা অগ্রাধিকার যাচাই বাছাইয়ের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন।
প্রস্তাবগুলো রাখতে গিয়ে পার্টির পক্ষ থেকে দেয়া ব্যাখ্যায় বলা হয়, দলীয় সরকারের অধীনে নতজানু নির্বাচন কমিশনের ভোট কারচুপির অভিযোগ থেকে জনগণ একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করতে থাকে।
প্রস্তাবে আরো বলা হয়, অনুসন্ধান কমিটির স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতিকে কমিটির সভাপতি করা যেতে পারে। সদস্য হিসেবে থাকতে হবে নিরপেক্ষ ও আস্থাভাজন হিসেবে বিবেচিত একজন শিক্ষাবিদ, নারী সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন নারী প্রতিনিধি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন এবং গণমাধ্যমের একজন প্রতিনিধি। নির্বাচন কমিশন আর্থিকভাবে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থাকতে হবে। এজন্য জাতীয় বাজেটে নির্বাচন কমিশনের জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে বৈঠক শেষে বঙ্গভবনের সামনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, বৈঠকে একটি অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ রেফারি ছাড়া যেমন একটি খেলা সম্ভব নয়, তেমনি নিরপেক্ষ ইসি ছাড়াও সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব।’
এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি একজন অভিজ্ঞ মানুষ। তিনি নিজেই দেশের নির্বাচনী ইতিহাস জানেন। তাই তাকে অনুরোধ করেছি, একটি শক্তিশালী ইসি গঠন করা দেশের জন্য জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘কমিশন গঠনের লক্ষ্যে এই আইন বর্তমান সংসদে হতে পারে অথবা রাষ্ট্রপতি চাইলে অধ্যাদেশ জারি করেও করতে পারেন।’