ক্রাইমবার্তা রিপোট: বিনা মূল্যের পাঠ্যপুস্তকে ভুলভ্রান্তি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) দুই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। এ ছাড়া ভুলত্রুটি নির্ণয় এবং এসব ভুলত্রুটির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সুপারিশ দিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এনসিটিবির যে দুই কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে তাঁরা হলেন এনসিটিবির প্রধান সম্পাদক প্রীতিশ কুমার সরকার ও ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ লানা হুমায়রা খান।
মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, লানা হুমায়রা খান তৃতীয় শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’ পরিমার্জনের দায়িত্বে ছিলেন। এই বইয়েই ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতাটি ভুলভাবে ছাপা হয়েছে। তাঁর কারণেই এই ভুলটি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে প্রধান সম্পাদক হিসেবে প্রীতিশ কুমার সরকারকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কারণ, প্রধান সম্পাদক হিসেবে তাঁর দায় আছে মনে করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজ প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এই দুই কর্মকর্তার ওপর ভুলের দায় বর্তায়—এ জন্য ওএসডি করা হয়েছে। এখন পূর্ণাঙ্গ তদন্তে কার কী দায় ছিল, তা চিহ্নিত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলতি বছরের পাঠ্যবইয়ে বিভিন্ন ধরনের ভুলভ্রান্তি থাকায় এবং বর্ণ শেখাতে অসংলগ্ন উদাহরণ দেওয়ায় বিতর্কের মুখে পড়েছে এনসিটিবি। কয়েকটি পাঠ্যপুস্তক থেকে আলোচিত কিছু গল্প-কবিতা বাদ দেওয়ায় নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, এর মাধ্যমে পাঠ্যবইয়ে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে। এ নিয়ে কিছুদিন ধরেই ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে কাল বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
অবশ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনসিটিবি জানিয়েছে, যেসব বইয়ে ভুল হয়েছে, সে বিষয়ে একটি সাধারণ সংশোধনী দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটি গঠন
পাঠ্যপুস্তকে ভুলত্রুটি নির্ণয় এবং এসব ভুলত্রুটির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সুপারিশ দিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রুহী রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মাহমুদুল ইসলাম এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক)।