আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা এই দাবি এবং বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইংরেজি বছরের প্রথম দিনে বিনা মূল্যে সব শিক্ষার্থীর হাতে পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সফলতা অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া পাঠ্যবইগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে গত কয়েক বছর ধরেই। চলতি বছরের পাঠ্যবইগুলোতে ছাপার ভুল, বানান-তথ্য বিকৃতি নিয়ে বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাগুলোকে দায়িত্বে অবহেলা হয়েছে বলে চালানোর চেষ্টা করা হলেও ধীরে ধীরে বের হয়ে এসেছে এসব বিকৃতির পেছনের ঘটনা। পশ্চাৎপদ ও মৌলবাদের তোষণনীতির কারণেই পাঠ্যপুস্তকে এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে। এর পেছনে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির যে ভয়ানক বিস্তার রয়েছে, তা গত কয়েক বছর ধরেই স্পষ্ট। এ বছরের পাঠ্যপুস্তক সেই সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির সঙ্গে সরকারের আপসরফারই চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তকগুলোতে যে ভুল ও তথ্য বিকৃতির ছড়াছড়ি, একটু লক্ষ করলেই বোঝা যায়, এটি তিন ধরনের। বানান ও তথ্যগত বিকৃতি, বাক্য গঠনে ভুল এবং মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তির অনুপ্রবেশ ঘটানো। এক ও দুই নম্বর ভুলগুলো সঠিক পরিকল্পনা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে হচ্ছে। কিন্তু তৃতীয় ভুলটি পরিকল্পিত। যাঁরা করছেন, তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবেই একটি সাম্প্রদায়িক জাতিরাষ্ট্র গঠনের জন্য এই কাজটি করে চলছেন।…শিশুদের মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে সাম্প্রদায়িক বিষ এবং তার বিস্তার ঘটানো হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রতিটি পর্যায়ে।
পাঠ্যপুস্তকে দলীয়করণ ও তোষামোদী করার অভিযোগ তুলে তারও নিন্দা জানান বিশিষ্ট এই ব্যক্তিরা।
বিবৃতিদাতা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন আহমেদ রফিক, কামাল লোহানী, যতীন সরকার, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, হায়াৎ মামুদ, সৈয়দ হাসান ইমাম, হাসান আজিজুল হক, সনৎ কুমার সাহা, অজয় রায়, সফিউদ্দিন আহমদ, কাজী মদিনা, আবুল মোমেন, রামেন্দু মজুমদার, দ্বিজেন শর্মা, মামুনুর রশিদ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, কবি আসাদ চৌধুরী প্রমুখ।